কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত শোবিজ তারকাদের একটি গ্রুপ চ্যাটের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। ‘আলো আসবেই’ নামক সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, সোহানা সাবাকে যাদের অবস্থান ছিল ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে! তারা মত দেন যেভাবেই হোক আন্দোলন থামাতে হবে। আরেকজন শিল্পী পরামর্শ দেন ছাত্রদের ওপর গরম পানি ঢেলে দেওয়ার।
এদিকে ‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাট ভাইরাল হবার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানাচ্ছেন শোবিজ অঙ্গনের একাধিক ব্যক্তিত্ব। এবার অভিনেত্রী মনিরা মিঠুর দাবি, আলো আসবেই গ্রুপের মতো আরও একটি গ্রুপ আছে। আজ বুধবার নিজের ফেসবুকে এ কথা জানান মিঠু। তার সেই পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো।
মনিরা মিঠু লিখেছেন, ‘আলো আসবেই গ্রুপের মতো একটি গোপন গ্রুপ আছে। সেখানে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে শিল্প ও শিল্পীর ভালো মন্দ নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন। প্রায় ৮ মাস আগে বিঞ্জের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ের সময় ড. এজাজ ভাই, আমি, শামিম আহমেদ, আমরা- অনেকেই একটা খুবই স্বাভাবিক হাস্যোজ্জ্বল ভিডিও করি এবং সেটা আমার পেজে আপলোড দিই। সেই ভিডিওর ভিউ হয় মিলিয়নের ওপরে। কারণ এজাজ ভাই আর আমাকে দর্শক কানেক্ট করতে পারে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের নাটকের সাথে। আমাদের শিল্পী সংঘ থেকে আমাকে অনুরোধ করা হয় সেই ভিডিওটি ডিলিট করে ফেলার জন্য। আমি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন? একজন বললেন যে শিল্পী সংঘের সেক্রেটারি নাজনীন হাসান চুমকির নাকি সারারাত ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল যে, কীভাবে আমি এই অশ্লীল ভিডিও আপলোড দিলাম। কারণ ভিডিওর এক জায়গায় ড. এজাজ ভাই কমলা খাচ্ছিলেন আর ‘বিচি’ শব্দটা উচ্চারণ করেছিলেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘অ্যাক্টর ইকুইটির সেই গোপন গ্রুপের একজন সদস্য আমাকে কিছু স্ক্রিন শট পাঠান আমি যেন দ্রুত ভিডিওটি ডিলিট করি। স্ক্রিন শটে দেখি সুজাত শিমুল আমাকে তুমুল গালাগাল করছেন। সারাজীবন মনে থাকবে সুজাত শিমুলের এই লাইনটি- এরা শিল্পী নামের বিষ্ঠা। মানে আমি আর কি। তিনি কবিতার মতো আরও অনেক গালাগাল দিয়েছিলেন আমাকে সেই গোপন গ্রুপে। আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, শিল্পী সংঘের কোনো সিনিয়র সদস্য সুজাত শিমুলকে বলেন নাই যে, একটি ভিডিওর জন্য মিঠু আপাকে এইভাবে গালাগাল করছো কেন? নাজনীন হাসান চুমকি তো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারতেন যে, মিঠু আপা ভিডিওটি শ্রুতিমধুর না, মুছে ফেলেন। কারণ তার সাথে আমার কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না।’
মনিরা মিঠু লিখেন, ‘শিল্পী সংঘের খুবই কনিষ্ঠ একজন সদস্য আমাকে সেই গোপন গ্রুপের স্ক্রিন শট পাঠিয়েছিলেন। আমাকে জানানোর সাথে সাথে ভিডিওটির কমেন্ট চেক করি, দেখলাম কোথাও আমার পেইজের দর্শক এই ‘বিচি’ শব্দটির সাথে কানেক্ট হননি। হয়তো বা আমার ও ডক্টর এজাজ ভাইয়ের ভক্তদের ‘কান’ শিল্পী সংঘের উচ্চপদস্থ পদ পাওয়া সদস্যদের ‘কান’-এর মত এতো অশ্লীল নয়, এত হিংসাত্মক নয়। আমি কিন্তু সেই ভিডিওটি ডিলিট করেছিলাম অপমানে ঘৃণায়, লজ্জায়। কিন্তু আমি ভীষণ বোকা, সেই ভিডিওটি ডিলিট না করলে আমি অনেক টাকা পেতাম। কারণ সেই সময়ে আমি নিয়মিত পেজে ভিডিও দিতাম এবং সেটা আমার একটা আয়ের উৎস ছিল। কিন্তু আমার বিজ্ঞ আদালত সুজাত শিমুলের ফাঁসির আদেশ আর নাজনীন হাসান না ঘুমিয়ে স্ট্রোক করতে পারেন এই লজ্জায় আমি প্রায় ভিডিও দেওয়া বন্ধ করে দেই।’