নাসিম রুমি: মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের জাঁদরেল অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম। অনেক বেশি নাটকে অভিনয় করা অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। তার শুরুটা মঞ্চনাটক দিয়ে। ঢাকা থিয়েটারে মঞ্চ অভিনেতা হিসেবে যোগ দেন তিনি। মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে শহীদুজ্জামান সেলিমের অভিনয়ে হাতেখড়ি হলেও পরবর্তীকালে তিনি ছোট এবং বড় পর্দায় কাজ করেছেন। ‘জোনাকি জ্বলে’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ছোট পর্দায় অভিষেক ঘটান। তাকে দেখা গেছে মঞ্চ ও টিভি নাটক নির্দেশনাতেও। অভিনয়–ক্যারিয়ারসহ নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা।
বর্তমানে মঞ্চ নাটকে নিয়মিত না হলেও সময় পেলে এখনো কাজ করি। পাশাপাশি আমার নির্দেশনায় ঢাকা থিয়েটারে দুটি নাটক নিয়মিত মঞ্চায়িত হচ্ছে। আমি মঞ্চকে ভালোবাসি। মঞ্চ আমার কাছে শ্রেষ্ঠ জায়গা যার কারণে এখনো সময় দেই। মঞ্চে অভিনয় বেশ উপভোগ করি। এ পর্যন্ত অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করেছি। জোনাকি জ্বলে নাটকের মাধ্যমে আমার টিভি নাটকে অভিনয়ের শুরু, যা এখনো চলছে।
মঞ্চ, টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করছি। টেলিভিশন নাটকে অভিনয় আমার পেশা। সিনেমাতেও পেশাগত ভাবে অভিনয় করছি। তবে আমার সবচেয়ে পছন্দের অভিনয়ের জায়গা মঞ্চ। রেডিও ভালো লাগে তবে কম কাজ করা হয়। কিন্তু মঞ্চনাটক স্বাচ্ছন্দ্যের দিক দিয়ে প্রথম।
পরিচালক ছিলাম। তবে এখন টিভি নাটক পরিচালনা করছি না। গত তিন বছরে কোনো নাটক পরিচালনা করিনি। না করার অনেক কারণ রয়েছে। অনেক টেলিভিশনের শুরুটা আমার নাটকের মাধ্যমে। একসময় নিয়মিত নাটক পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে অনিয়মিত হই। কারণ, একটি নাটক নির্মাণ করতে অনেক মেধা ও শ্রম যায়। কিন্তু সেই পরিশ্রমের পারিশ্রমিক সময় মতো পাওয়া যায় না। যার কারণে পরিচালনা থেকে দূরে আসি।
চোরাবালি, মেঘমল্লার, বাপজানের বায়োস্কোপ, অজ্ঞাতনামা, প্রিয়তমা, সুড়ঙ্গ সিনেমার চরিত্রগুলো আমার বেশ ভালো লাগার। এরকম অসংখ্য চরিত্র আছে ভালো লাগার। নাটকেও অসংখ্য চরিত্র আছে। চরিত্র পছন্দ হলেই কাজ করি।
বেশকিছু সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে। তার মধ্যে রয়েছে জাহিদ হোসেনের ‘সুবর্ণভূমি’, অপূর্ব রানার ‘জল রং’, রাখাল সবুজের ‘পুলসিরাত’ ইত্যাদি। এক একটি সিনেমায় একেক রকমের চরিত্রে দেখা যাবে আমায়। সবসময় চেষ্টা করি চরিত্রে ভিন্নতা রাখার। কখেনা যাতে দর্শক বিরক্ত না হয় সে কথা মাথায় রেখেই অভিনয় করি।
প্রত্যেক শিল্পীর জীবনেই অপূর্ণতা থাকে। সে যত ভালো কাজই করুক না কেন তার মধ্যে অপূর্ণতা থাকবেই। একটু ভালো করলে আরও ভালো করার তাগিদ জাগে। আমি সেভাবে ভালো কিছু করিনি। যে কারণে অপূর্ণতা অনেক বেশি। এ দেশে জন্ম না নিয়ে যদি অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে নিতাম তাহলে আমাকে আরও ভালো ভাবে ব্যবহার করা যেত। বিশ্ব বাজারে আমাদের সিনেমা সেভাবে জায়গা করতে পারেনি। আমাদের কাজের জায়গা আরও যদি প্রকট হতো তাহলে আমরা আরও বেশি সুযোগ পেতাম। আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরি হতো। আমরা হয়ত সেটি দেখে যেতে পারব না। হয়ত পরবর্তী প্রজন্ম পরিবর্তন আনবে কিংবা দেখে যাবে। কিন্তু এটা আমাদের মতো শিল্পীদের জন্য অনেক বড় ধরনের অপ্রাপ্তি।