এবার শবনম ফারিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনলেন সাবেক স্বামী হারুনুর রশিদ অপুর মামা আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল। তাঁর দাবি, ফারিয়া ইভ্যালি কাণ্ড থেকে বাঁচতে সাবেক স্বামীকে শিকারে পরিণত করার সস্তা পথ বেঁচে নিয়েছেন। ফারিয়া আঙুলে আঘাত পেয়েছিল, কারণ সারা রাত ঝগড়া ও আঘাত করায় অপুর শরীর ছিল খামচিতে ক্ষত-বিক্ষত। নারীর গায়ে হাত তোলার শিক্ষা অপু পায়নি উল্লেখ করে জুয়েল বলেন, লোভী ও অর্থলিপ্সু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। ‘বিয়ের পর ফারিয়া তার নামে ফ্ল্যাট কিনতে চাপ দিয়েছিল।’
সোমবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে ঐ পোস্ট দেন অপুর মামা পরিচয়দানকারী জুয়েল। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ছড়িয়ে পড়ে। তার ঐ পোস্টে ফারিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
অপুকে নিজের বোনের ছেলে দাবি করে জুয়েল বলেন, ‘আমি সাধারণত ফেসবুকে ব্যক্তিগত বিষয় বলি না। একটি বিষয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে এবং একপাক্ষিকভাবে তা আবার মিডিয়ায় আসছে। তাই না বলে পারছি না। ইভ্যালি ইস্যুতে নাম আসার পর যে সস্তা পথটি শবনম ফারিয়া বেছে নিয়েছে তা হচ্ছে, সাবেক স্বামীকে শিকারে পরিণত করে সহানুভূতি লাভের চেষ্টা। ফারিয়ার সাবেক স্বামী অপু আমার বোনের ছেলে। অপুসহ আমার ভাগ্নেদের মতো সহজ-সরল, সৎ, ভদ্র ও ভালো ছেলে খুব কমই হয়। তারা আমার হৃদয়ের অংশের মতো, কিন্তু তবু অন্যায় করলে আমি সাফাই দিতাম না। কিন্তু যে প্রচার-অপপ্রচার চলছে, তার একটি বস্তুনিষ্ঠ সারমর্ম তুলে ধরছি।’
তিনি বলেন, ‘ফারিয়ার প্রথম বিয়ে ভেঙে যায় ১০ দিন আগে। মানসিকভাবে যখন সে বিধ্বস্ত, তখন তার পাশে বন্ধুর মতো দাঁড়িয়েছিল অপু। দীর্ঘদিন বন্ধুত্ব চলার পর, একে অপরকে জেনে ও বুঝে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। পারিবারিকভাবে আমরা সাধারণ মেয়ে চাইলেও তাদের সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কোনো আপত্তি করা হয়নি।
লোভী ও অর্থলিপ্সু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে ফারিয়া- উল্লেখ করে অপুর মামা জুয়েল বলেন, ‘আমার দুলাভাইয়ের মৃত্যুর পর আপা একা হয়ে পড়ায় নিজের বাড়িতে না থেকে অন্য বোনদের কাছাকাছি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। ফারিয়া অপুদের তিন বেডরুমে ভাড়া থাকার কথা উল্লেখ করে লোভী ও অর্থলিপ্সু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তবে অপুর উত্তরাধিকার সূত্রে যা আছে, তার যতটা সে জানে তা উল্লেখ করা উচিত ছিল। যা-ই হোক, বিয়ের পর ফারিয়া তার মাসহ অপুকে নিয়ে আলাদা থাকতে চেয়েছিল, যাতে আমরা কেউ দ্বিমত করিনি। বিয়ের কেনাকাটা থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান পর্যন্ত ফারিয়া যা চেয়েছে, যেভাবে চেয়েছে, যেভাবে অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছে, আমার আপা তাই দিয়েছেন। যখন চেয়েছে ইন্ডিয়া গেছে, ব্যাংকক গেছে। কখনো প্রশ্ন করা হয়নি কেন বা কোথায় টাকা খরচ হবে!’
ফারিয়া নিজের নামে ফ্ল্যাট কেনার চাপ দিয়েছিল উল্লেখ করে বলেন, ‘বিয়ের পর ফারিয়া তার নামে ফ্ল্যাট কিনতে চাপ দিয়েছিল। দুটি বহুতল ভবন ও নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট থাকার পরও এমন দাবি অযৌক্তিক মনে করেছেন আমার বোন। তবে আলাদা থাকতে আপত্তি করেননি। ফারিয়া কখনো বলতে পারবে না আমাদের কেউ কখনো তাকে কোনো বিষয়ে সামান্যতম কটু কথা বলেছে।’
আঙুল ভাঙার প্রেক্ষাপট টেনে জুয়েল বলেন, ‘ফারিয়ার আঙুল ভেঙেছিল, যদিও এখন বলা হচ্ছে হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ফারিয়া আঙুলে আঘাত পেয়েছিল, কারণ সারা রাত ঝগড়া ও আঘাত করায় অপুর শরীর ছিল খামচিতে ক্ষত-বিক্ষত। নারীর গায়ে হাত তোলার শিক্ষা অপু পায়নি। কিন্তু নিজেকে রক্ষার চেষ্টায় আঙুলে আঘাত লাগা অস্বাভাবিক নয়। প্রহার করতে চাইলে কেউ আঙুল ভাঙে না। আর তেমন কিছু হলে ফারিয়া নিশ্চিতভাবেই মামলা ঠুকে দিত।
বিচ্ছেদের পর কাবিনের টাকা প্রসঙ্গে বলেন, অপু-ফারিয়ার বিচ্ছেদ হয়েছে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে। তবে সেখানে কোনো পক্ষের অভিভাবক ছিল না। আমরা এবং ফারিয়ার দুই বোনও তালাকের বিরুদ্ধে ছিল। ফারিয়া কাবিনের টাকা পরিশোধ করে তালাক দিতে বলেছিল। বিয়েতে দেওয়া স্বর্ণালঙ্কার কাবিনের টাকার উসুল হিসেবে ধরার নিয়ম থাকলেও তা ধরা হয়নি। তবু সামান্যতম আপত্তি না তুলে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপুকে দেওয়া একমাত্র আংটিটিও ফেরত নিয়ে যায়। তালাকের পর ফারিয়ার স্ট্যাটাস কী ছিল তা অনেকেই পড়েছেন।
ইভ্যালি প্রসঙ্গে জুয়েল বলেন, পরিশেষে সাংবাদিক ভাইদের বলব- কেন কী হয়, তা জানা ও বোঝার মতো জ্ঞান নিশ্চয়ই আপনাদের আছে।
উল্লেখ্য। ইভ্যালির সঙ্গে যে তিনজন সেলিব্রিটি যুক্ত ছিল, তাদের দুজনের দায় এড়ানোর সুযোগ থাকলেও, সুযোগ নেই ফারিয়ার। কারণ সে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিল না, ছিল ইভ্যালির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা। অর্থ লুটপাটের কোনো তথ্যই বোধ হয় তার অজানা থাকার কথা নয়। অর্থাৎ সুষ্ঠু বিচার হলে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিলেই হবে না, গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদসহ পুরো বিচারপ্রক্রিয়ায় তাকে যুক্ত থাকতে হবে।