অভিনয় জগতের অন্যতম পরিচিত মুখ শবনম ফারিয়াও নির্যাতিত হয়েছেন তার স্বামীর কাছে। এমনকি নির্যাতন করে হাত ভেঙে দিয়েছিলেন তার স্বামী।
এ নিয়ে শবনম ফারিয়ার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট লেখেন তিনি। তার সঙ্গে এমন ঘটনা দুই বছর আগে ঘটলেও মানুষ কী বলবে বা পরিবার কীভাবে মানুষের সামনে মুখ দেখাবে তা ভেবে সে সময় মুখ খোলেননি তিনি।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলমার নির্যাতনের কারণে মৃত্যু প্রসঙ্গে অনেক আলোচনা শুরু হয়েছে। আর সেই প্রসঙ্গ নিয়োই নিজের না বলা দুই বছর আগের এ ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন শবনম।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে শবনম ফারিয়া লেখেন,
মৃত মেয়েটার ছবি দেখার পর বার বার আমি দেড়/দুই বছর পিছনে ফিরে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ছে কিভাবে আমি দেবী সিনেমার পুরো প্রোমোশন ভাঙ্গা হাত নিয়ে করেছি, যখন কেউ জানতে চেয়েছি কি হয়েছে, বলেছিলাম সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যাথা পেয়েছি!
আমার সাহস ছিল না সবাইকে বলার যে কিভাবে ব্যাথা পেয়েছি!
কারণ আমি জানতাম এই মানুষটার সাথেই থাকতে হবে, নইলে মানুষ কি বলবে! আমার মা সমাজে মুখ দেখাবে কিভাবে! আমার দুই বোন যে স্বপ্ন নিয়ে এত আয়োজনের প্ল্যান করছে তাদের কি জবাব দেব!
কাবিনের ৩ মাস না যেতেই এত কিছু! নিশ্চই সমস্যা আমারই!
আমি এইটা ভেবে দিনের পর দিন জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি!
বার বার ভেবেছি কিছু হলে সবাই আমাকেই খারাপ বলবে!
কিন্তু আমি খুব সৌভাগ্যবান যে আমার মা আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে! সাহস দিয়েছে! বুঝিয়েছে মানুষ কি বলে তার চেয়ে নিজের ভাল থাকা আরও অনেক জরুরি!
জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেয়ে বেঁচে থাকা আরও জরুরি!!!
শবনম ফারিয়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত কণ্ঠশিল্পী লোপা হোসাইনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্ট শেয়ার করে এই কথাগুলো লেখেন।
শেয়ার করা ওই পোষ্টে লোপা হোসাইন লেখেন, সহ্য করতে না পেরে ডিভোর্স দিলে কতনা গালি খেত এলমা মেয়েটা। সহ্য করতে করতে মরে গেল বলেইনা এখন আমরা মায়াকান্না কাঁদছি…
এদেশের বাবামায়েরা সমাজে মানইজ্জত বাঁচাতে মেয়েদের এমনভাবে ব্রেইনওয়াশ অথবা ব্ল্যাকমেইল করে যে ডিভোর্স দিয়ে লাইফের রিস্টার্ট বাটন চাপার চেয়ে পাওয়ার অফ বাটন চেপে দেয়াই বেশী সহজ মনে হয়। আর তার আগেই যদি স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরে ফেলে, তাহলে তো কথাই নেই…
এইসব ঘটনা দেখলে নিজের অজান্তেই নিজের অতীতে ফিরে যাই…