নাসিম রুমি: মহানায়িকা সুচিত্রা সেনকে ঘিরে অনেক গল্পই প্রচলিত। শুটিং ফ্লোরে তিনি নাকি ছিলেন অভিজাত ও আত্মমগ্ন। কথাবার্তা কম বলতেন, নিজের মতো ক্যামেরার সামনে শট দিতেন, তারপর বইয়ের পাতা ওল্টাতেন।
অনেকের মতে, তার ব্যক্তিত্বে ছিল একরকম দাপট, যা অনেক সময় দম্ভ বলে মনে হতো। তবে গসিপ ম্যাগাজিনে যা-ই লেখা থাক, সহঅভিনেতা-অভিনেত্রীদের বয়ানে পাওয়া যায় এক ভিন্ন সুচিত্রাকে।
তিনি একজন অত্যন্ত পেশাদার শিল্পী, যিনি কাজকে রাখতেন সর্বোচ্চ প্রাধান্যের আসনে। এমনই এক পেশাদারিত্বের নজির দেখা গিয়েছিল ১৯৬৯ সালে, সুশীল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘মেঘ কালো’ ছবির শুটিংয়ে।
এই সিনেমার শুটিং চলাকালীনই খবর আসে, সুচিত্রা সেনের স্বামী দিবানাথ সেন মারা গেছেন।
জানা যায়, জাহাজ ভ্রমণের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন দিবানাথ। স্বামীর মৃত্যুসংবাদ শুনে সুচিত্রা যেন মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। কেবল বলেছিলেন, ‘আমার জীবনের একটা চাবি হারিয়ে গেল।’
অথচ এই ব্যক্তিগত শোক তাকে শুটিং থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। বুকের গভীরে কষ্ট চেপে রেখেও তিনি শেষ করেছিলেন ‘মেঘ কালো’র শুটিং।
কারণ, মহানায়িকারা এমনই হন—দৃঢ়, নিয়ন্ত্রিত এবং শিল্পের প্রতি দায়বদ্ধ। সেদিন তাকে দেখে শুটিং সেটে থাকা অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। আজও সেই ঘটনা ভোলেননি তার সহকর্মীরাও।