আজাদ আবুল কাশেম: স্বনামধন্য চিত্রপরিচালক বেলাল আহমেদ-এর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। প্রয়াত এই গুণি চিত্রপরিচালকের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
বেলাল আহমেদ ১৯৪৮ সালের ২৮ নভেম্বর, ঢাকার হাতিরপুলে জন্মগ্রহণ করেন। সিদ্ধেশরী স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে, ঢাকা কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার।
বেলাল আহমেদ ছোট বেলা থেকে অভিনয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন। শিশু শিল্পী হিসেবে কয়েকটি প্রামান্য চিত্রে অভিনয় করেছেন। পাকিস্তান আমলে কাজী জহির পরিচালিত উর্দু ভাষার ‘বন্ধন’ ছবিতে কিশোরশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এছাড়াও ‘রেডিও পাকিস্তান’ এবং ‘ভয়েস অব আমেরিকা’র প্রচারিত নাটকেও কণ্ঠ দিয়েছেন।
বেলাল আহমেদ ১৯৬৭ সালে চিত্রপরিচালক নজরুল ইসলামের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে আসেন ।
একক পরিচালক হিসেবে ১৯৭৬ সালে তিনি নির্মাণ শুরু করেন ‘নাগরদোলা’ চলচ্চিত্রটি। ‘নাগরদোলা’ মুক্তিপায় ১৯৭৯ সালে। এই ছবিটি ব্যাপক সফলতার পাশাপাশি, প্রসংশিত হয় সুধীমহলে।
বেলাল আহমেদ পরিচালিত অন্যান্য ছবিসমূহ- নয়নের আলো, ঘর আমার ঘর, আমানাত, বন্ধন, গঙ্গা যমুনা, স্বাক্ষী প্রমাণ, ক্রিমিনাল, নন্দিত নরকে, অনিশ্চিত যাত্রা।
সর্বশেষ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম-এর ব্যানারে নির্মিতব্য অনুদানের ছবি ‘ভালোবাসবোই তো’-এর কাজ অসমাপ্ত রেখেই তাঁকে চলে যেতে হয়েছে পরপারে ।
বেলাল আহমেদ একজন নাট্য নির্মাতাও ছিলেন। টেলিভিশনের জন্য তিনি বেশকিছু ভালোমানের নাটক নির্মান করেছেন। তরিক আলী হাডারী, রচি মম ফালগুনী, ইতিহাসের ছোট্ট কথা, জল্লা, আদি ও আদিম’সহ বেশকিছু নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মান করেছেন তিনি।
বেলাল আহমেদ বাংলাদেশের স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অন্যতম একজন। তাঁর পরিচালিত সবকটি ছবিই আলোচিত ও প্রসংশিত হয়েছে সুধীমহলে। জনপ্রিয় হয়েছে সিনেমাদর্শকদের কাছে। সৃজনী নৈপুণ্যের সাফল্যে চলচ্চিত্রকার এবং টিভি নাটকের নির্মাতা হিসাবে বেলাল আহমেদ তাঁর নিজের অবস্থান সুদুঢ় করেছিলেন অব্যাহতভাবে। নাগরদোলা, নয়নের আলো ও নন্দিত নরকের মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করে, তিনি নিজেকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।