নাসিম রুমি: বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্তের আজ মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের মুন্সিপাড়া নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাসস্থান বগুড়া জেলার চকরতি গ্রামে। বসবাস করতেন পুরান ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের নিজ বাড়িতে।
সুভাষ দত্তের পেশাগত জীবন শুরু হয় বাণিজ্যিক চিত্রশিল্পী হিসেবে। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ দেখে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহ তৈরি হয় তার। এহতেশামের ‘এ দেশ তোমার আমার’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এ দেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ-এর পোস্টার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন তিনি। মাটির পাহাড় চলচ্চিত্রে আর্ট ডিরেকশনের মধ্য দিয়ে তার পরিচালনা জীবন শুরু হয়।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ এপ্রিল মুক্তি পায় সুভাষ দত্ত নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘সুতরাং’। ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফলতা পায়। সুভাষ দত্তের সিনেমাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—‘সুতরাং’, ‘কাগজের নৌকা’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’, ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘আবির্ভাব’, ‘বলাকা মন’, ‘সবুজ সাথী’, ‘বসুন্ধরা’, ‘সকাল সন্ধ্যা’, ‘ডুমুরের ফুল’, ‘নাজমা’, ‘স্বামী-স্ত্রী’, ‘আবদার’, ‘আগমন’, ‘শর্ত’, ‘সহধর্মিণী’, ‘সোহাগ মিলন’, ‘পালাবদল’, ‘আলিঙ্গন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তার সুদীর্ঘ কর্ম জীবনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ শ্রেষ্ঠ প্রযোজক-পরিচালকের পুরস্কারে ভূষিত করে এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক প্রদান করে। এছড়াও তিনি দেশি-বিদেশি অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছিলেন। সুভাষ দত্ত ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।