নাজনীন নীহা: আম্মুই আমার স্বপ্নের পৃথিবী। তাঁকে ঘিরেই সাজাই স্বপ্নের ভুবন। আমার জন্ম উত্তরায়। জন্মের পর থেকে আম্মুর আদরে-শাসনে বড় হয়েছি। আব্বু ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। আম্মুর হাতেই ছিল সংসারের হাল। আমার ক্যারিয়ার খুব বেশি দিনের নয়। এই স্বল্প সময়ে একটুও যদি সফলতা ধরা দেয় তার পুরোটাই এসেছে আম্মুর অবদানে ভর করে। তাঁর অনুপ্রেরণা না পেলে নীহাকে হয়তো সবাই অন্যরকমভাবে পেতো।
অন্য আট-দশটা পরিবারের চেয়ে একটু অন্য রকম আমাদের পরিবার। অভিনয় করি এটি শুরুর দিকে পরিবারের অনেকেই চাননি। বলা যায়, পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে অভিনয়ে নেমেছি। তবে আম্মুর সাপোর্ট পেয়েছি। আশপাশের মানুষ প্রশংসা করলে আম্মু অভিনয়টাকে যেন মন থেকেই গ্রহণ করে নেন। তখন থেকে আরও তুমুল উৎসাহ নিয়ে কাজ করছি।
এখন আমার সব কাজেই আম্মু মানসিক শক্তি ও সাহস জোগান। আমরা দুই বোন ও এক ভাই। আমি বড়। ঢাকার বাইরে কোনো নাটক কিংবা টেলিছবির শুটিংয়ে গেলে আম্মু সঙ্গেই থাকেন। মনে পড়ে, আমি যখন কাজ শুরু করি তখন বোনের বয়স মাত্র তিন বছর। ওই ছোট বোনকে সামলিয়ে আম্মু অনেক কষ্ট করে আমার সঙ্গে শুটিংয়ে আসতেন। বিশেষ করে শীতের দিনগুলোতে ঢাকার বাইরে বেশি যাওয়া হতো। প্রতিবছর অন্তত দুইবার করে ঘুরতে যেতাম। মায়ের সঙ্গে বেড়ানোর স্মৃতি এখনও চোখে লেগে আছে। তিনি আমাদের পরিবারের জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন। আমাদের যতটা সুখী রাখা যায় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
অভিনয়ের যে পারিশ্রমিক পাই তা দিয়ে আম্মুর ইচ্ছে পূরণের চেষ্টা করি। এমন বিশেষ দিনে আম্মুকে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। এটা ঠিক যে, মনে রাখার মতো আম্মুকে এখনও কিছু দিতে পারিনি। ইচ্ছা আছে, আম্মুকে একদিন বড় কিছু দিয়ে চমকে দেব; সেই দিনের জন্য আপাতত চমক তোলাই থাক। তবে আজ শুটিং নেই। আম্মুর সঙ্গে সারাদিন ঘুরবো। তাঁর পছন্দের খাবার খাওয়াবো; আমার অভিনয় থেকে পাওয়া টাকায়; এরচেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে!