অরুণা ইরানি বলিউডের বেশ পরিচিত একজন মুখ। বিগত পাঁচ দশক ধরেই তিনি বলিউডে বেশ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকায় অভিনয় করে এসেছেন। তবে একসময় কাজের সঙ্কটে ভুগছিলেন এই অভিনেত্রী। বলিউডের নামকরা সব পরিচালক ও প্রযোজক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তাঁর থেকে।
নিজের সেই কষ্টের দিনগুলো আবারো স্মরণ করলেন এই অভিনেত্রী।
অভিনেত্রী হিসেবে তখন বেশ সুনাম অর্জন করেছিলেন অরুনা। নামিদামি পরিচালকদের সিনেমায় নিয়মিত কাজ সরার সুযোগ পাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে বলিউডের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা মেহমুদের সাথে তাঁর বিয়ের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে সেই গুজবে ভারী হয়ে ওঠে ইন্ডাস্ট্রি। সেই গুজবের খেসারত দিতে হয়েছিল এই অভিনেত্রীকে। দীর্ঘদিন তাকে প্রায় কাজ ছাড়াই চলতে হয়েছে। পরিচালক থেকে প্রযোজক সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। সেই সময় একজন বিবাহিতা নারীর জন্য অভিনয় জগতে টিকে থাকা ছিল কঠিন এক যুদ্ধ।
সম্প্রতি নিজের অতীতের সেই দুঃখজনক অধ্যায় স্মরণ করে ই’টাইমসকে অরুনা বলেন, ‘সেই সময়টা আমার জন্য বিভীষিকাময় ছিল। আমি জানি না কিভাবে গুজব শুরু হয়েছিল যে মেহমুদ সাহেব আমাকে বিয়ে করেছেন! কোনো প্রযোজক আমার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ছিলেন না। একে একে সকলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন। আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ একদিন দাদা খোন্দকে আমাকে একটি তামিল চলচ্চিত্রের গানে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেটি আমাকে আবার প্রত্যাবর্তন করতে সাহায্য করেছে।
সেই বিব্রতকর পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দাদা খোন্দকের দেওয়া সুযোগটা গ্রহণ করে আমি গানটির জন্য আশা স্টুডিওতে শুটিং করছিলাম। তখন আমি রাজকুমার কোহলির সাথে দেখা করি। তিনিও সেখানে শুটিং করছিলেন। তিনি আমাকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আরে অরুণা, তুমি কাজ করছো? আমি বললাম, হ্যা কাজ করছি। তিনি বললেন, ‘আমি ভেবেছি তুমি বিয়ে করে নিয়েছ। এখন আর কাজ করো না। ’
এভাবেই কাজে ফেরেন অরুণা এবং পরবর্তীতে নায়িকা হবার স্বপ্ন থেকে সরে আসেন। সব ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেন।
এ প্রসঙ্গে অরুনা বলেছেন, ‘সেই গুজবের অধ্যায় পার করার পর আমি আবার ধীরে ধীরে কাজ পেতে শুরু করি। এরপর শুধুমাত্র নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে মাথা ঘামাইনি আমি। সব ধরনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। সব চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ’
অরুণা ইরানি ১৯৬১ সালে ‘গঙ্গা যমুনা’ দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। নিজের অভিনয় গুণে অনেক ব্যবসাসফল সিনেমায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সফর, আন্দাজ, ক্যারাভান, ববি, দিল তো পাগল হ্যায়, গোপী কিষাণ, বেটা তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। সিনেমার পাশাপাশি টিভি নাটকেও তিনি বেশ জনপ্রিয়। কাহানি ঘর ঘর কি, ডোলি সাজা কে’ দেস মে নিকল্লা হোগা চাঁদ তাঁর প্রশংসনীয় টিভি নাটক।