ভূতের ছবির ভক্তদের নড়েচড়ে বসার সময় চলে এসেছে। নতুন বছরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা হলগুলোতে রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে পুতুলের মতো দেখতে এক ভয়ংকর ভূত। এবার সেই ভূত আসছে বাংলাদেশে! গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিনির্ভর ভৌতিক ছবি ‘মেগান’। মুক্তির পর থেকে ছবিটি দেখার জন্য দর্শকদের বিপুল সমাগম ঘটে সিনেমা হলগুলোতে।
১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেটের ছবি এরই মধ্যে আয় করেছে ১০৪ মিলিয়ন ডলার। প্রশংসা পেয়েছে সমালোচকদের কাছ থেকেও। যার ফলে বিশ্বজুড়ে ছবিটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে চলেছে ক্রমাগত। শিগগিরই বাংলাদেশের দর্শকরা ছবিটি দেখার সুযোগ পাবেন। ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে ‘মেগান’।
ভৌতিক ছবি যারা নিয়মিত দেখেন তাদের ‘অ্যানাবেল’ ছবির কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ছবিতে দেখা গেছে, আদরের মেয়েটির আকস্মিক মৃত্যুর ২০ বছর পরে এক পুতুল-নির্মাতা ও তার স্ত্রী তাদের বাড়িতে এক সন্ন্যাসিনী ও কিছু অনাথ বাচ্চাকে জায়গা দেন। তারপর শুরু হয় ভয়ংকর সব কাণ্ড। ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে অ্যানাবেল নামের পুতুলটি। কী সাংঘাতিক সব দৃশ্য! যারা দেখেছেন তারা জানেন। অ্যানাবেল এমনই আতঙ্ক তৈরি করেছে যে এ ছবি দেখার পর নিজেদের অনেকেই ছোটদের খেলার সঙ্গী পুতুলকে বাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলেছিলেন বলে জানা গেছে। শুধু ছোটরা নয়, বাড়ির বড় সদস্যরাও ভয় পেতে শুরু করেন―এমন খবরও এসেছে। ভয়ংকর ভূতের ছবি দেখে অবস্থা এমনই হয়। অথচ গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা। হরর ছবি ভয় তৈরি করে না, বরং ভয় প্রশমিত করে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, স্বেচ্ছায় হরর বিনোদন বেছে নিলে ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে পালানোর প্রবণতা কমে। নিরাপদ পরিবেশে কৃত্রিম ভয় তৈরির মাধ্যমে হরর ফিকশন দর্শকদের আবেগ ও মানসিক স্থিতি নিয়ন্ত্রণ চর্চার সুযোগ করে দেয়। ফলস্বরূপ মানসিক স্থিতিশীলতা বাড়তে দেখা যায়।
‘মেগান’-এর গল্পে দেখা যাবে, একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কম্পানির দক্ষ রোবট বিশেষজ্ঞ জেমা (অ্যালিসন উইলিয়ামস) মেগান নামে একটি মানুষের আকারের রোবট পুতুল ডিজাইন করে; এই রোবট পুতুলটি এআই (আর্টিফিশাল ইন্টেলিজেন্স) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তার মানে মেগান মানুষের মতো অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে। মেগানকে এমন করে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে সেটি শিশুদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী আর অভিভাবকদের সহায়ক হতে পারে। জেমার বোন ও তার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তাদের একমাত্র কন্যা কেডি (ভায়োলেট ম্যাকগ্রো) জেমার কাছে আশ্রয় পায়। জেমা কেডির অভিভাবক হলেও সব দায়িত্ব দেওয়া হয় মেগানকে। তাকে নির্দেশ দেওয়া হয় সে যাতে কেডির কোনো ক্ষতি না হয় তা নিশ্চিত করে। আর এই দায়িত্বটি মেগান বাড়াবাড়িভাবে পালন করতে শুরু করে। সহিংস হয়ে ওঠে মেগান আর একসময় সে জেমার নির্দেশ মানতেও অস্বীকৃতি জানায়। একের পর এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটতে থাকে।