সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৫) না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।
তবে বরেণ্য এই অভিনেতার দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা খরচ বহনের জন্য বিক্রি করতে হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা দামের দুটি ফ্ল্যাট।
গেল বছর গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান এই তথ্য জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, চিকিৎসার খরচের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়েগিয়েছিল। পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকেও ধার-দেনা করতে হয়েছিল। কারণ, সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথে চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল, সে জন্য সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়েছে। সন্তানরা দেশে থেকে তার বাবার জন্য টাকা পাঠাচ্ছে।
সব সম্পত্তি চলে গেলেও কোনো আফসোস নেই আমাদের। আপনাদের মিয়া ভাই দ্রুত সুস্থ হয়ে সবার মাঝে ফিরে আসুক, এটাই একমাত্র চাওয়া। ফারুক তো আমার একার নয়, পুরো বাংলাদেশের। দেশে সবাই তার অপেক্ষায় আছেন।
সে সময় তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরা ফারুককে যখন আইসিইউতে রাখার পরামর্শ দেন ওই সময় আমাদের হাত একেবারে শুন্য ছিল। অনেক চেষ্টা করে করোনার কারণে উপযুক্ত দামে ফ্ল্যাটও বিক্রি করতে পারছিলাম না তখন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফারুকের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার দেওয়া অর্থ দিয়েই আইসিইউর প্রথম মাসের বিল পরিশোধ করেছি। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
সে সময় ফারুকের একমাত্র ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ বলেছিলেন, দীর্ঘদিন আব্বু সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার খরচ চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদেরকে। এখনপর্যন্ত বারিধারার দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছি। সেখানে আমরা থাকার আগেই বিক্রি করতে হলো। আব্বু হাসপাতালে বেশিদিন থাকলে আরও টাকার প্রয়োজন হতে পারে। স্বজনদের কাছ থেকেও দেনা করেছি।
যাই হোক না কেন, আব্বুর সুস্থতার জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবো। ইতোমধ্যে সরকারও সহযোগিতা করেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তবে যেটুকু সহযোগিতা আমরা পেয়েছি, তাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ। বিপদের সময় তিনি আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিষেক হয় ফারুকের। পাঁচ দশকের বেশি সময়ে অভিনয় করেন বহু দর্শকপ্রিয় সিনেমায়। ‘মিয়াভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পরই চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘মিয়াভাই’ হিসেবে খ্যাতি পান এই অভিনেতা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন বরেণ্য এই নায়ক।