ভারতীয় টেলিভিশন জি বাংলার ‘সারেগামাপা’ রিয়েলিটি শোয়ে অংশ নিয়ে পরিচিতি পান বাংলাদেশের মাইনুল আহসান নোবেল। তবে ক্যারিয়ারের অল্প সময়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনায় বেশি থেকেছেন এ উঠতি গায়ক।
সম্প্রতি পর্যটন জেলা বান্দারবানে বেড়াতে যান নোবেল। সেখানে গিয়ে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার উদ্ভট কাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
বুধবার (২৫ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ছবি প্রকাশ করেন নোবেল। এতে দেখা যাচ্ছে- দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের নাফাকুম জলপ্রপাতের পাশে এক নারীর সঙ্গে বসে রয়েছেন নোবেল। তিনি ঠিক কী করছিলেন, সেটি একেবারে স্পষ্ট না হলেও গাঁজার কলকি টানছেন বলেই মনে করছেন অনেকেই!
বিষটি নিয়ে নোবেলের স্ত্রীও মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি নোবেলের স্ত্রী মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদ। ফেসবুকে এই ছবিটিকে ইঙ্গিত করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
সুত্রে জানা যায়, ২৫ আগস্ট (বুধবার) রাতে বান্দরবানে ঘুরতে যান। তার সঙ্গে একজন নারীকে দেখা গেছে। ওই নারীর সঙ্গে রুমা বাস স্টেশন এলাকার গার্ডেন সিটি নামের আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন নোবেল। হোটেলে ওই নারীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন তিনি।
এ বিষয়ে আরও জানা যায়, পরেরদিন (২৬ আগস্ট) ওই নারীকে নিয়ে বান্দারবানের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে দেখা যায় নোবেলকে। এ সময় প্রকাশ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করতে দেখা যায় তাকে। এছাড়া এলাকাবাসীর সঙ্গে উদ্ভট আচারণ করতে থাকেন। এতে এলাকার মানুষ তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
সন্ধ্যায় গার্ডেন সিটি হোটেল সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে আসে নোবেল। কিন্তু মধ্যরাতে হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে এসে মদ্যপ অবস্থায় চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। তাকে শান্ত করতে গেলে হোটেল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। হোটেলের অন্য এক অতিথি তাকে থামানোর চেষ্টা করলে নোবেল তাকে লাঞ্চিত করেন।
জানা যায়, এমন পরিস্থিতিতে রাত ৩টা নাগাদ গার্ডেন সিটি আবাসিক হোটেলের মালিক মো. জাফর বাধ্য হয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পুলিশ এসে নোবেলকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে নিজ থেকেই ভোরবেলা রুমে চলে যান নোবেল।
মো. জাফর জানান, একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে নোবেলের আচারণ খুবই অসভ্য। রুম ভাড়া নেওয়ার সময় তার সঙ্গে নারীকে স্ত্রী ও পরে বোন বলে পরিচয় দেন। নেশা করে হোটেলে উদ্ভট সব কাণ্ড ঘটিয়েছে। এমনকি অন্য অতিথির গায়ে পর্যন্ত হাত তুলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশকে জানালে তারা এসে নোবেলকে শান্ত করতে পারেনি। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের নেজারত-ডেপুটি-কালেক্টর জাকির হোসাইনকে বিষয়টি অবহিত করি।
বিষয়টি নিয়ে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, নোবেলের বিষয়ে আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এরপর বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। বে-আইনি কিছু করলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এদিকে, সম্প্রতি নোবেলের স্ত্রী মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদ ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগও তুলেন এই গায়কের বিরুদ্ধে। তিনি জানান, গোপনে ধারণকরা পার্সোনাল মোমেন্টের ভিডিও দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করেন নোবেল।