বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের ওপর শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শুনানির এ দিন ধার্য করেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আজ আদালতে নিপুণের পক্ষে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ এবং জায়েদ খানের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি।
এদিকে আদালতের শুনানি শেষে নানা বিষয় নিয়ে বিএফডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন নিপুণ। সেখানে তিনি তার মামলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, মামলা থেকে সরে যাওয়ার জন্য তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিন সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে ফুল কেনার জন্য বনানী সুপার মার্কেটে যান চিত্রনায়কা নিপুণ। সেখানে যা ঘটেছিল তা নিয়ে তিনি বলেন, ‘মার্কেটের সামনে গাড়ি থেকে নামার সময় দরজা খুললে বেশ অপরিচিত কয়েকজন মানুষ আমার কাছে সাহায্য চায়। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম তারা ভিক্ষুক। পরে দেখি, তারা ভিক্ষুক নয়। লোকগুলো আমাকে বলা শুরু করে মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য। না হলে ঝামেলা আরও বাড়বে। এসব বলে সেখান থেকে চলে যায়। আমি শুধু তাকিয়ে দেখছিলাম। মুখে মাস্ক ছিল।’
নিপুণ আরও বলেন, ‘তাই এরকম একটা প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে আমি বনানী থানায় কথা বলি। তারপর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। জিডি নম্বর ৮২৯। আপনারা চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনলে ৫ ফেব্রুয়ারি সেই প্রেক্ষিতে আপিল বোর্ড জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে।
এরপর আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বিষয়টি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করে আসছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। গেল ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
জায়েদ খানের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে ওই দিন জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আহসানুল করীম ও আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মজিবুল হক ভূঁইয়া।
পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন অভিনেত্রী নিপুণ। নিপুণ আক্তারের পক্ষে তার সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন। সেই আবেদনের ওপর ৯ ফেব্রুয়ারি চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। শুনানিতে জায়েদ খানের পক্ষে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে ‘স্থিতাবস্থা’ জারি করেছিলেন চেম্বার আদালত। গতকাল (১৪ ফেব্রুয়ারি) চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।