আজাদ আবুল কাশেম: জনপ্রিয় অভিনেতা-মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আলী’র শষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। প্রয়াত এই গুণি অভিনেতার স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
ফরিদ আলী ১৯৪৫ সালের ৭ এপ্রিল, ঢাকায় জন্মগ্রহন করেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে ফরিদ আলী ছিলেন সবার ছোট। ছোটবেলা থেকে অভিনয় পাগল ফরিদ আলী ১৯৬২ সালে শহীদুল আমীনের লেখা ‘কনে দেখা’ মঞ্চনাটক দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন।
১৯৬৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘ধারাপাত’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি।
ফরিদ আলী আরো যেসব ছবিতে অভিনয় করেছেন সেগুলো হলো- সংগম, অভিশাপ, দরশন, চান্দা, পরশমণি, সপ্তডিঙ্গা, যে আগুনে পুড়ি, দাগ, চৌধুরী বাড়ী, তিতাস একটি নদীর নাম, রংবাজ, জীবন তৃষ্ণা, রক্তের ডাক, ফরিয়াদ, স্লোগান, কার হাসি কে হাসে, জালিয়াত, পালঙ্ক, অধিকার, গুন্ডা, গোপালভাঁড়, কাজলরেখা, তরুলতা, অনুরাগ, ঘুড্ডি, এতিম, লাগাম, কলমীলতা, ভাগ্যলিপি, সাধনা, ভাইজান, আয়না বিবির পালা, শত্রু, ছেলে কার, প্রভৃতি ।
ফরিদ আলী চলচ্চিত্রের পাশাপাশি, মঞ্চ-বেতার এবং টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন।
১৯৬৪ সালে মুনীর চৌধুরী রচিত টেলিভিশনের প্রথম নাটক ‘একতলা দোতলা’য় তিনি অভিনয় করেছেন।
টেলিভিশনের প্রথম হাসির নাটক ‘ত্রিরত্ন’তেও অভিনয় করেছিলেন ফরিদ আলী।
তিনি নাটক রচনা ও নির্দেশনাও দিয়েছেন। আমাদের টেলিভিশনের চতুর্থ নাটক ‘নবজন্ম’ ছিল ফরিদ আলীরই লেখা। তাঁর লেখা সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় আলোচিত নাটক ছিল ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’। তিনি টেলিভিশনে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন।
ফরিদ আলী ১৯৭৫ সালে, মনোয়োরা বেগম বিউটির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
ফরিদ আলী একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, নাট্যকার, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কৌতুক অভিনয়ে দর্শক মনে আনন্দের দুত্যি ছড়িয়েছেন। দর্শক মনে এখনো দাগ কেটে রয়েছে তাঁর সাবলিল অভিনয় দক্ষতা। বিশেষ করে ‘দুবাইওয়ালা’ নাটকের এই সংলাপটি- ‘টাকা দেন দুবাই যাব, বাংলাদেশে থাকব না’, এতো জনপ্রিয় হয়েছিল যে, টিভি দর্শকরা তাঁকে কোনো দিনও ভুলবেন না।
এই গুণী অভিনেতা হয়তো আজ শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে নেই, তবে অভিনয়গুণে তিনি রয়েছেন আমাদের সবার হৃদয়ের মাঝে।