আজাদ আবুল কাশেম: বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবুল খায়ের। ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক-প্রদর্শকও। আজ তাঁর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। প্রয়াত মোহাম্মদ আবুল খায়ের-এর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মোহাম্মদ আবুল খায়ের ১৯২৮ সালের ২০ অক্টোবর, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার ঝুটিগ্রামে, জন্মগ্রহন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।
রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এক সময় চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন, চলচ্চিত্র প্রযোজনার মাধ্যমে। তিনি যেসব ছবি প্রযোজনা করেন সেগুলো হলো- সুতরাং, কাগজের নৌকা এবং জয়বাংলা । তাঁর প্রযোজনা সংস্থার নাম ছিল ‘ইস্টার্ন ফিল্মস’। ঢাকার ‘পূর্ণিমা’ সিনেমা হল তাঁরই প্রতিষ্ঠিত।
তিনি এক সময় এফডিসির পরিচালনা পর্ষদ ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মোহাম্মদ আবুল খায়ের এমএনএ ছিলেন। তৎকালীন ফরিদপুর জেলার পাঁচ আসনের (বর্তমান গোপালগঞ্জ-১ আসন) নির্বাচিত সংসদ সদস্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ রেকর্ড করা এবং প্রচারের সাথে যারা জড়িত ছিলেন মোহম্মদ আবুল খায়ের (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম করপোরেশন লিঃ /ঢাকা রেকর্ড) ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবুল খায়ের সাহেব,
মুজিবনগর সরকারের ‘চলচ্চিত্র বিভাগ’-এর প্রধান ছিলেন।
মোহাম্মদ আবুল খায়ের একজন শিল্প উদ্যোক্তা। তিনি যমুনা ব্যাংক-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।
তাঁর পুত্র খায়রুল আনাম শাকিল এবং পুত্রবধূ কল্পনা আনাম বাংলাদেশের খ্যাতিমান নজরুল সংগীত শিল্পী। চিত্রপরিচালক বাদল রহমান তাঁর জামাতা, আর তারেক মাসুদ ছিলেন তাঁর শ্যালক।
মোহাম্মদ আবুল খায়ের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবক। এদেশের স্বাধীকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য ২০১৪ সালে, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাঁকে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে, চলচ্চিত্রশিল্প-সংস্কৃতিতে এবং মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ আবুল খায়ের-এর অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।