আজাদ আবুল কাশেম: চলচ্চিত্রগ্রাহক আখতার হোসেন-এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২১ সালের ২ আগস্ট, সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। প্রয়াত এই গুণী চলচ্চিত্রগ্রাহক এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্রগ্রাহক আখতার হোসেন ১৯৪৬ সালের ৩০ আগস্ট, কুমিল্লা জেলার কাদিরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । পিতার নাম ইব্রাহীম খলিল এবং মাতার নাম আবেদা খাতুন। তিনি হাসানপুর উচ্চবিদ্যালয় হতে মেট্রিকুলেশন এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ হতে ইন্টারমিডিয়েট ও বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।
নায়ক রহমান পরিচালিত ‘মিলন’ ছবির সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে, প্রথমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন তিনি। চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের ‘Let there be light’ চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণের সাথেও জড়িত ছিলেন ।
ছবিটি শেষ হওয়ার আগেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং পরবর্তিতে জহির রায়হান অন্তর্ধান হয়ে যাওয়ার কারনে এই চলচ্চিত্রটি আর শেষ করে মুক্তি দেয়া সম্ভব হয়নি।
আখতার হোসেন যেসব চলচ্চিত্রে চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চাবুক, কার হাসি কে হাসে, বাঘা বাংগালী, অরুনোদয়ের অগ্নিস্বাক্ষী, আকাঙ্ক্ষা, নোলক, বসুন্ধরা, রেশমিচুড়ি, নাগীন, মাসুম, ঈদ মোবারক, নতুন পৃথিবী, আশা, আলী আসমা, মৎসকুমারী,
সাজা, আগুনের পরশমনি, রঙ্গীন সাগরভাসা, এখনো অনেক রাত, হঠাৎ বৃষ্টি, নাচোলের রানী, প্রভৃতি ।
আখতার হোসেন বেশ কিছু টেলিভিশনের নাটক ও বিজ্ঞাপনের চিত্রগ্রহণ করেছেন।
তিনি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন আখতার হোসেন।
অসম্ভব প্রচারবিমুখ, নিভৃতচারী একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্ব ছিলেন আখতার হোসেন। ছিলেন সৃজনশীল চলচ্চিত্রগ্রাহক।
কাজ করেছেন প্রখ্যাত সব চলচ্চিত্রকারদের সাথে, অনেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক ছিলেন তিনি। আমাদের চলচ্চিত্র তথা শিল্প-সংস্কৃতি ভুবনের গুণী মানুষ আখতার হোসেন, তাঁর সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে আমাদের স্মৃতিতে বেচেঁ থাকবেন অনন্তকাল।