English

27 C
Dhaka
সোমবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

চলচ্চিত্রকার ফখরুল আলম এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

আজাদ আবুল কাশেম: ফখরুল আলম, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা ও সাংবাদিক। চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালক হিসেবে বাণিজ্যিক সফলতা তিনি পাননি। প্রযোজক-পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিতও ছিলেন না । তবে তিনি ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী, নিরিক্ষাধর্মী, পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণের দক্ষ কারিগর। প্রচারবিমুখ চলচ্চিত্রকার ফখরুল আলম-এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৪ সালের ১৬ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। প্রয়াত ফখরুল আলমের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

ফখরুল আলম ১৯৪২ সালের ৪ আগস্ট, ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। অভিনেত্রী আতিয়া চৌধুরী (শাহানা চৌধুরী) তাঁর স্ত্রী ।

১৯৬২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘সূর্যস্নান’ ছবির সহযোগী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে আসেন ফখরুল আলম । তিনি নিজে পরিচালনা করেছেন- মানুষ অমানুষ, জয়বাংলা, শনিবারের চিঠি, এই তিনটি ছবি।

ফখরুল আলম প্রযোজিত চলচ্চিত্র- মানুষ অমানুষ, শনিবারের চিঠি, বিন্দু থেকে বৃত্ত, সাগরভাসা, তীর ভাঙা ঢেউ, ছুটির ফাঁদে।
‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ ও ‘জয়বাংলা’ এই দুটি চলচ্চিত্রে ফখরুল আলম অভিনয়ও করেছেন ।

তিনি একজন চলচ্চিত্র সাংবাদিকও ছিলেন। চলচ্চিত্রবিষয়ক পত্রিকা ‘রাঙা প্রভাত’ ও ‘সিনেমা’ নামে দুটি পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন ফখরুল আলম।

চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালক হিসেবে বাণিজ্যিক সফলতা তিনি পাননি। প্রযোজক-পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিতও ছিলেন না । তবে তিনি ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী, নিরিক্ষাধর্মী, পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণের দক্ষ কারিগর। তিনি প্রচারবিমুখ চলচ্চিত্রকার ফখরুল আলম।

জানা যায়, আলোচিত ‘রূপবান’কে নিয়ে অনেকেই ছবি করার কথা ভাবলেও, তিনিই প্রথম ‘রূপবান’ নামে ছবির শুটিংও করেছিলেন- কিন্তু হয়নি। পরীক্ষামুলকভাবে একত্রে দুইটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মানুষ অমানুষ’ তিনিই আগে (১৯৬৫-তে) শুরু করেছিলেন– কিন্তু অর্থাভাবে তিনি পিছিয়ে পরেন, তাঁর আগেই মুক্তি পেয়ে যায় চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্তের- ‘আয়না ও অবশিষ্ট’।

বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা নিয়ে পাকিস্তান আমলেই ফখরুল আলম ‘জয় বাংলা’ চলচ্চিত্রটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন, কিন্তু তৎকালীন সরকার সেন্সর দেয়নি! স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২-এ মুক্তি পেলেও, সাফল্য পাননি। যথাসময়ে এই ছবি মুক্তি পেলে আজ ইতিহাস হয়ে থাকতো- ‘জয় বাংলা’ ও জয় বাংলার নির্মাতা ফখরুল আলম।

এদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম চলচ্চিত্র ‘শনিবারের চিঠি’ (১৯৭৪) তিনিই নির্মান করেন। এই প্রথম আমাদের দেশে দুই টিকিটে এক ছবি দেখার প্রচলন। কিন্তু দুই টিকিটে এক ছবি দেখার মানসিকতা আমাদের কম ছিলো বলে, ব্যবসায়ীক সাফল্য পাননি ফখরুল আলম।
তাঁর প্রযোজিত আরেকটি নিরিক্ষাধর্মী চলচ্চিত্র ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ মুক্তিপায় ১৯৭০ সালে। এই ছবির মাধ্যমে ফখরুল আলম উপহার দেন আমাদের দেশের প্রথম মহিলা চিত্রপরিচালক রেবেকা’কে।

ফখরুল আলম যেসব চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন তা হয়তো ব্যবসাসফল হয়নি, কিন্তু আলোচিত হয়েছে-প্রসংশিত হয়েছে। ভালো চলচ্চিত্রের একজন দক্ষ নির্মাতা হিসেবে তিনি অনেকের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। ভাগ্য হয়তো তাঁর সহায় হয়নি। তাঁর প্রযোজিত-পরিচালিত ছবিগুলো ব্যবসায়ীক সাফল্য পায়নি। তাই তিনি প্রচারের আলোয়- আলোকিত হতে পারেননি । তবে চলচ্চিত্রবোদ্ধা, চলচ্চিত্র সমাঝদারদের কাছে ফখরুল আলম একজন প্রতিভাবান মেধাবী চলচ্চিত্রকার হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পেরে ছিলেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ফখরুল আলম-এর চলচ্চিত্রকর্ম অবশ্য অবশ্যই স্মরণযোগ্য।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন