কলকাতার প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার অকাল মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ তার পরিবার। অভিনেত্রীর চলে যাওয়াটা শোবিজ অঙ্গন থেকে শুরু করে ভক্ত-অনুরাগীদের কেউই মেনে নিতে পারেননি। মেয়ের এমন মৃত্যুর শোক যেন কোনোভাবেই কাটাতে পারছেন না মা শিখা শর্মা। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর শোক না কাটতেই মেয়ের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে হঠাৎ বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ঐন্দ্রিলা শর্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জীবনবিমা কমিটির পক্ষ থেকে স্মরণসভার আয়োজন করে ওই সংস্থার এক কর্মচারী। সভায় উপস্থিত হয়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন অভিনেত্রীর মা।
তিনি বলেন, ডা. পিয়া ঘোষের ইগোর কারণেই ডিপ কোমায় চলে যায় ঐন্দ্রিলা। অসুস্থতার দিন আমার সঙ্গেই শুয়ে ছিল ঐন্দ্রিলা। হঠাৎ কি হলো মেয়েটার, ১০ মিনিটের মধ্যে হাত-পা নাড়া বন্ধ হয়ে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম আমরা। চিকিৎসা শুরু হলো। হাসপাতালের কেয়ার খুবই ভালো ছিল। ওটির পরে জ্ঞানও ফিরেছিল মেয়ের। কিন্তু তারপরেই হঠাৎ কোমায় চলে গেলো। ঐন্দ্রিলার চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও কিছু করা সম্ভব ছিল। কিন্তু সেটা করা হয়নি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেসময়ে দুজন ডাক্তারের মধ্যে অনেক ইগোর সমস্যা চলছিলো। কিন্তু আমরা তো আমাদের মেয়েকে বাঁচাতে চাইব। ডা. মল্লিক ঐন্দ্রিলার সার্জারি করেছিলেন। তিনি অসম্ভব অমায়িক একজন মানুষ। ওই সময় আমাদেরকে অনেক সহযোগিতা করেছেন তিনি। কিন্তু ডা. পিয়া ঘোষ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি। এটা সারাজীবন আমাদের মনে রয়ে যাবে। এমনকি তিনি যে এমআরআই করেছিলেন সেটাও ঠিকমতো হয়নি।
আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বহুবার আলোচনা করেছি। সবাই আমাদের হেল্প করেছে, শুধুমাত্র তিনি ছাড়া। পিয়া ঘোষ একজন ডাক্তার হওয়ার পরও নিজের ইগোর কারণে কোনো সহযোগিতা করেননি। ঐন্দ্রিলার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে কোমায় পাঠিয়ে দিলেন তিনি। পিয়া ঘোষ কখনই মানবিক নন।
ঐন্দ্রিলার মা আরও বলেন, অনেক ডাক্তার ঐন্দ্রিলাকে দেখে যে ট্রিটমেন্ট দিয়েছেন, সেটা সঠিকভাবে করা হয়নি। আমার বড় মেয়ে একজন ডাক্তার অনেক অনুরোধ করার পরও তিনি শোনেননি। আমার মেয়েকে বাঁচানো যেতো। ওর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতো না। কারণ, ওর হার্ট-লাং-কিডনি সবই যথেষ্ট স্ট্রং ছিল। সবাই এসে চিকিৎসার জন্য সাজেশন দিচ্ছেন সেটাই ওনার ইগোতে লেগে গেলো। একবারও আমার মেয়েটাকে বাঁচানো দরকার সেটা ভাবলো না। একটা ২৪ বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে মোটেও তার এমন করা উচিৎ হয়নি। এই দুঃখ নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।
আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চিকিৎসার ব্যাপারে কথাও বলেছিলাম। তবে গ্রিন করিডোর করে নিয়ে যাওয়ার মতো স্টেবল ছিল না ও। চিকিৎসার জন্য অরিজিৎ সিং যোগাযোগে করেছিলেন। এমনকি মুম্বাইয়ের ডা. বিশ্বাস বলেছিলেন, একটু সময় পেলেই তারা এয়ারবাসে করে নিয়ে যাবে। এর মধ্যেই হঠাৎ হাসপাতালের ইনচার্জ ঝটপট করে ঐন্দ্রিলার সব হেলথ সাপোর্টগুলো খুলে দিয়েছিলেন। তবে এসব বিষয়ে তিনি কতটুকু দক্ষ সে বিষয়ে অনেক সন্দেহ রয়েছে আমাদের।