ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনের মৃত্যুর মর্মান্তিক সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারী। গতকাল ফেসবুকে এক ভিডিওতে ইলিয়াস কাঞ্চনের বাস্তবজীবনের কিছু কথা তিনি তুলে ধরেন এবং ইলিয়াস কাঞ্চনের মতো চলচ্চিত্র জগৎ এর অন্যান্ন তারকাদের এই কাজে এগিয়ে আসার আহবান জানান মালেক আফসারী। তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একজন ইলিয়াস কাঞ্চন যেভাবে দেশের মানুষের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন তাঁর পাশে চোখে পড়ার মতো আজও চলচ্চিত্র অঙ্গণের কাউকে দেখা যায়নি যা অত্যন্ত দু:খজনক বিষয়।
অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীকে হারানোর পর শুরু করেছিলেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন। ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন নিহত হয়েছিলেন ১৯৯৩ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায়। তার মৃত্যুকে ঘিরে সেদিন সারাদেশে আলোড়ন উঠেছিলো যেমন তেমনি সেই ঘটনায় পাল্টে গেছে স্বামী ইলিয়াস কাঞ্চনের জীবন। এরপর থেকে গত ২৮ বছর ধরে তিনি চালাচ্ছেন নিরাপদ সড়কের সংগ্রাম। গতকাল ১ডিসেম্বল ছিলো ইলিয়াস কাঞ্চনের আন্দোলন নিসচার ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সারাদেশে বিভিন্ন সচেতনতা কর্মকান্ডের মদ্ধদিয়ে দিনটি পালিত হয়। ২৯বছরে পা রাখলো ইলিয়াস কাঞ্চনের সামাজিক আন্দোলন নিরাপদ সড়ক চাই।
ভিডিওতে মালেক আফসারী ১৯৯৩ সালের সেই ভয়াবহ দিনটির কথা স্মৃতিচারন করেন। এবং সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন সড়ক দুর্ঘটনায় যার আপনজন হারায় সে যানে এর ব্যাথা। আমাদের ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই তাঁর স্ত্রীকে হারিয়েছেন, আমি নিজ চোখে দেখেছি সেদিন তাঁর কষ্ট তাঁর কান্না তাঁর হৃদয়ের রক্তক্ষরন। বান্দরবনে একটি সিনেমার শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে আসছিলেন তার স্ত্রী সন্তান, তাদের সাথে একই মাইক্রোবাসে এটিএম শামসুজ্জামানও ছিলো।
ড্রাইভার জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলো। দুর্ঘটনার সময় চালক মাইক্রোবাস ঘুরানোর চেষ্টা করলে ট্রাক সরাসরি এসে ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রীর বরাবর আঘাত করে। এরপর টেলিফোনে ইলিয়াস কাঞ্চন সংবাদ শোনার পর সেখানে দৌড়ে যায়। সেই কি করুণ দৃশ্য। আমি দেখেছি ইলিয়াস কাঞ্চন তার সন্তানকে কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছে আর হেল্ফ হল্ফে বলে চিৎকার করছে। ঐ দিনের সেই মুহুর্তের কথা মনে পড়লে সত্যি হৃদয়টা ভেঙ্গে যায়। মালেক আফসারী বলেন, ড্রাইভার জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলো। দুর্ঘটনার সময় চালক মাইক্রোবাস ঘুরানোর চেষ্টা করলে ট্রাক সরাসরি এসে ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রীর বরাবর আঘাত করে। এরপর টেলিফোনে ইলিয়াস কাঞ্চন সংবাদ শোনার পর সেখানে দৌড়ে যায়। সেই কি করুণ দৃশ্য। আমি দেখেছি ইলিয়াস কাঞ্চন তার সন্তানকে কোলে নিয়ে দৌড়াচ্ছে আর হেল্ফ হল্ফে বলে চিৎকার করছে। ঐ দিনের সেই মুহুর্তের কথা মনে পড়লে সত্যি হৃদয়টা ভেঙ্গে যায়। মালেক আফসারী বলেন, সেদিনের পর থেকে ইলিয়াস কাঞ্চনের জীবন উল্টা পাল্টা হয়ে যায় তচনছ হয়ে যায় তার জীবন। এরপর তিনি ঘুরে দাড়ান। যাদের ভালোবাসায় তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন হয়েছেন, তাদের বাঁচাতে ইলিয়াস কাঞ্চন নেমে আসে রাস্তায় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন গড়ে তোলেন। ইলিয়াস কাঞ্চন একাই রাস্তায় মাইক হাতে নেমে পড়েন। আজও তিনি রাস্তায় আছেন। তার এই কাজ বিশ্বের কাছে ইতিহাস হয়ে থাকবে। কিন্তু আফসোস হয় এই মানষটি একা এতদুর কাজ করে যাচ্ছেন অথচ সেভাবে তার পাশে চলচ্চিত্র জগৎ এর কাউকে কখনো দেখা যাচ্ছেনা। আমি ক্যামেরার পেছনের মানুষ। ক্যামেরার সামনের যে মানুষ আছেন তাদের উচিৎ এই মানুষের পাশে দাড়ানো। মালেক আফসারী চলচ্চিত্র অঙ্গণের সকলকে ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে আরো বেগবান করার অনুরোধ জানান।
ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন…