সময়টা ২০১২ সাল, ‘ভালোবাসার রঙ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় নিজের নাম লেখান মাহিয়া মাহি। এরপর বেশকিছু দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তার ক্যারিয়ারের একযুগ। কিন্তু কখনও ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন ছিলেন না এই অভিনেত্রী। তবে জীবনে বড় একটি ধাক্কা খেয়ে এখন ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন মাহি। নতুন ভাবনায় এই ‘অগ্নি’ কন্যা।
সম্প্রতি তিনি এক সাক্ষাৎকারে মাহি বলেন, চলতি বছর থেকে আমি যত সিনেমা করব সব ভালো প্রজেক্ট। আমি আর কোন নরমাল কাজ করব না। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মানুষের একেক রকেমর একেক অভিজ্ঞতা হয়।
প্রত্যেকটা শিল্পী যদি বড় রকমের ধাক্কা না খায় তাহলে সে প্রকৃত শিল্পী হতে পারে না। এটা আমার কাছে এই সময়ে মনে হচ্ছে। এখন আমি কাজ নিয়ে যেভাবে সিরিয়াস, ক্যারিয়ার নিয়ে যেভাবে চিন্তা করছি ১২ বছরে ক্যারিয়ার নিয়ে এত চিন্তা করিনি।
মাহি আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এখন আবার আমার জিরো থেকে সবকিছু শুরু করি। নতুন করে শুরু করে ‘অগ্নি’ ও ‘পোড়ামন’ সিনেমার সময়ে যে রকম জনপ্রিয়তা ছিল, সে রকম আরও একবার কিভাবে অর্জন করা যায় কিংবা সেটা কিভাবে ছাড়িয়ে যাব তা নিয়ে রাত-দিন যেভাবে চিন্তা করি আমার কাছে মনে হয়, আমার জীবনে যা যা হয়েছে তা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।
তাহলে হয়ত নতুন করে জীবনটা আরও আগে শুরু করতে পারতাম। আমি কখনোই ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন ছিলাম না। তবে আমার ভাগ্য খুবই ভালো। সে জন্যই আপনাদের সামনে এখনো বসে আছি। কখনোই আমি বেশি প্রফেশনাল ছিলাম না। এখন যেভাবে চিন্তা করছি, সেটা যদি আগে থেকে চিন্তা করতাম তাহলে আমার অবস্থা আরও অনেক ভালো থাকত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ মন্তব্য করে বলেছিলেন, মাহি যদি ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন থাকত তাহলে শাকিব খানকে টপকে যেত। একথা মাহি নিজেও মনে করেন। তিনি বলেন, নিজেকে শাকিব খানের সঙ্গে তুলনা করব না।
কারণ, তিনি অনেক বড় মাপের একজন শিল্পী। অনেক যুগ পর এ রকম শিল্পী আসে। তবে আজিজ ভাই যেটা বলেছেন সেটা উড়িয়ে দেয়া যাবে না।
আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মাহির অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে আসলে মিশা ভাইয়ের প্যানেল থেকেই অংশ নেব। কারণ, এই প্যানেলে গুণী সব শিল্পীরা আছেন।
তাই এ প্যানেলের প্রতি দুর্বলতা বেশি। আমার যে কোনো বিপদে যাকে আমি পাশে পাব তাদেরকেই তো সবসময় সাপোর্ট করব। যখন যে সমস্যা হয়েছে মিশা ভাইদের ফোন করা মাত্রই তারা এগিয়ে এসেছেন। রিয়াজ ভাইকেও পাশে পেয়েছি। কিন্তু অন্য কাউকে কখনোই পাশে পাইনি।
শিল্পী সমিতির নির্বাচন করলে মাহিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হতো না—জাতীয় নির্বাচনের সময় চিত্রনায়িকা মাহিকে নিয়ে এমনই মন্তব্য করেছিলেন আরেক চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। তার ভাষ্যমতে, মাহি শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিলে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তা জাতীয় নির্বাচনে কাজে লাগাতে পারত। তার এমন মন্তব্যর পর শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ভাবছেন মাহি।
তিনি বলেন, তিনি (নিপুণ) সিনিয়র শিল্পী, যেহেতু বলেছেন এ জন্যই নির্বাচন নিয়ে বেশি চিন্তা ভাবনা করছি। তার এ কথার জন্য নির্বাচনে আসার সম্ভাবনা বেশি। আমার নির্বাচনে কাউকে পাশে পাইনি। একমাত্র ফেরদৌস ভাই ফোন করেছিল। তিনি অনেক বড় মনের পরিচয় দিয়েছিলেন।
যোগ করে ‘তবুও ভালবাসি’ সিনেমার এই নায়িকা বলেন, সে সময় সবচেয়ে আমার বড় শক্তি সাংবাদিক ভাইয়েরা পাশে ছিল। পুরো বাংলাদেশ সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে আমার কার্যক্রম দেখেছেন। এখন সহকর্মীদের চেয়ে অনেক আপন লাগে সাংবাদিকদের।