English

29 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

অভিনেত্রী বনানী চৌধুরী’র ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

অভিনেত্রী বনানী চৌধুরী’র ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৯৫ সালের ৫ জানুয়ারি, মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। প্রয়াত এই গুণী অভিনেত্রীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

বনানী চৌধুরী (বেগম আনোয়ারা নাহার চৌধুরী লিলি) ১৯২৪ সালের মে মাসে, পশ্চিমবঙ্গের (ভারত) বনগাঁ’য়ে, জন্মগ্রহণ করেন । পিতার নাম আফসার উদ্দিন। বনগাঁ ছিল তাঁর পুলিশ অফিসার বাবার কর্মস্থল। পৈতৃক নিবাস বৃহত্তর যশোর জেলার, শ্রীপুর থানার সোনাতনদি গ্রামে, যা বর্তমানে বাংলাদেশের মাগুরা জেলায় অবস্থিত। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় ভারতের মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘী গ্রামের একটি স্কুলে। ১৯৪১ সালে ম্যাট্টিক পাস করেন তিনি। পরবর্তীতে আই. এ. ও বি. এ. পাস করেন।

১৯৩৬ সালে অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে, বনানী চৌধুরীর বিয়ে হয়ে যায় রাজ্জাক চৌধুরীর সাথে। অল্প বয়সে তাঁর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও, স্বামীর উৎসাহেই পড়ালেখা চালিয়ে যান তিনি। তাঁর স্বামীর উৎসাহেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। বনানী চৌধুরী-রাজ্জাক চৌধুরীর দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তান ছিল, যারা আজ প্রয়াত।

শৈশব থেকেই বনানী চৌধুরী তাঁর অভিনয় প্রতিভার পরিচয় দিতে থাকেন। গ্রামে বা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অভিনয়ে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া কবিতা আবৃত্তিতেও তাঁর পারদর্শিতা ছিল। চলচ্চিত্রের প্রতিও একটা দুর্বলতা ছিল তাঁর।
তখনকার দিনে মুসলিম পরিবারের মেয়েদের চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণের কথা চিন্তাও করা যেত না। তারপরেও বনানী চৌধুরীর স্বামী ও তাঁর দুই বন্ধু, মানিক বন্দোপাধ্যায় এবং সুলতান আহমেদ-এর একান্ত সহযোগিতায় ও প্রচেষ্টায়, তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। বনানী চৌধুরী অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ বছর আগে’ মুক্তি পায় ১৯৪৬ সালে, পরিচালনা করেন বিখ্যাত পরিচালক গুনময় বন্দোপাধ্যায়। শুরু হয় বাংলা চলচ্চিত্রে, প্রথম বাঙ্গালী মুসলিম মহিলা নায়িকার পদযাত্রা। একজন ‘বেগম আনোয়ারা নাহার চৌধুরী’ হয়ে যান চলচ্চিত্র নায়িকা ‘বনানী চৌধুরী’। একের পর এক তিনি কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এবং জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন। বনানী চৌধুরী অভিনীত উল্লেখযোগ্য কিছু চলচ্চিত্র- ‘বিশ বছর আগে’, ‘চলার পথে’, ‘পূর্বরাগ’, ‘অভিযোগ’, ‘মায়াজাল’, ‘পরশ পাথর’, ‘শেষের কবিতা’, ‘মহাসম্পদ’, ‘আম্রপালী’, ‘তাপসী’, ‘নন্দরামের সংসার’, ‘পথহারা’, ‘নিয়তি’, ‘স্বাক্ষর’, ‘হ্যাঁ’, ‘শাপমোচন’, ‘বিষের ধোঁয়া’, ‘ঝাঁসি কি রাণী’, ‘কেরি সাহেবের মুন্সী’, ‘সহসা’, ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন’, ইত্যাদি।

বনানী চৌধুরী বাংলাদেশের যেসব চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তারমধ্যে- ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ (মুক্তিপায়নি), ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সুখ দুখের সাথী’, ‘আল্লাহ মেহেরবান’, ‘বদনাম’, ‘আকাশ পরি’, অন্যতম উল্লেখযোগ্য।

যে সময়ে আমাদের সমাজে মুসলিম নারীদের, বাড়ির বাইরে যাওয়ায় ছিল প্রবল নিষেধাজ্ঞা। গান-বাজনা বা চলচ্চিত্রে অভিনয় করা ছিল তাদের কাছে স্বপ্নেরও অধিক। সেই সময়ে, সেই যুগে, শত-সহস্র বাধা পেরিয়ে, উপমহাদেশের প্রথম বাঙ্গালী মুসলিম নারী হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন, বাংলাদেশের বনানী চৌধুরী। সুগম করে দেন, অন্যান্য মুসলিম নারীদের চলচ্চিত্রে অভিনয় করার মসৃণ পথ।

চলচ্চিত্র অভিনয়ে, বাঙ্গালী মুসলিম মহিলাদের মধ্যে অগ্রপথিক হিসেবে ইতিহাস হয়ে আছেন- বনানী চৌধুরী।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন