আমাদের দেশের প্রথম নারী চিত্রপরিচালক ও অভিনেত্রী রেবেকা’র আজ ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩ আগস্ট, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। প্রয়াত এই গুণি মানুষটির স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
রেবেকা (রাত্রি রায়, মনজন আরা বেগম) ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ, পাবনা জেলার পৈলানপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত জিল্লুর রহিম পরিচালিত ‘এইতো জীবন’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন।
রেবেকা অভিনীত অন্যান্য ছবিগুলো হলো – মালা, বাহানা, উলঝান, ছোট সাহেব, ডাকবাবু, ১৩নং ফেকুওস্তাগার লেন, আগুন নিয়ে খেলা, মানুষ অমানুষ, বিন্দু থেকে বৃত্ত প্রভৃতি।
তাঁর পরিচালিত একমাত্র চলচ্চিত্র ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’, মুক্তি পায় ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে। ছবিটি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করে সারা পাকিস্তানে। ছবিটি সে সময়ে সুধীমহলে বেশ প্রসংশিত হয়। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ছবিটি সম্পর্কে লেখা-লেখিও হয় প্রচুর।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য রেবেকা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্মাননাও পেয়েছেন। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘মালা’ ছবির জন্য লিও ফিল্মস প্রদত্ত সম্মাননা স্মারক, ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে চলচ্চিত্রের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক এবং সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য পাবনা কমিউনিটি ক্লিনিক কর্তৃক প্রদত্ত স্বর্ণপদক লাভ করেন ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে।
রেবেকা ব্যক্তিজীবনে খবির উদ্দিনের সংগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর দুই পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেত্রী- লেখিকা-চিত্রপরিচালক। তাঁর লেখা ৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে । তিনি ঢাকায় শিল্পব্যাংক-এ কর্মরত ছিলেন।
যে সময়ে মেয়েদের ঘরের বাহিরে যাওয়ার বিধীনিষেধ মানতে হতো, বিশেষ করে মুসলিম মেয়েদের। সেই সময়ে-সেই যুগে রেবেকা একজন মুসলিম নারী হয়েও, শুধু অভিনয়ই করেন-নি, চলচ্চিত্র নির্মাণও করেছেন। এ এক সংস্কৃতিক-প্রগতিশীল নারীর পক্ষেই সম্ভব। বাংলাদেশের নারীদের চলচ্চিত্র নির্মাণের পথ সুগম করে দিয়েছেন যে মহীয়সী নারী, আমাদের দেশের প্রথম নারী চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে, তাঁর নাম চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ছবি- মীর শামসুল আলম বাবু
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন