চিত্রনায়িকা একা একেবারেই হারিয়ে গিয়েছিলেন। শাকিব রাজত্ব-পরবর্তী যে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছিল সেখানে একা ছিলেন না। একেবারে অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন। হুট করে আলোচনায় এলেন গৃহকর্মী পিটিয়ে। তার পরও যে একা সামনে এলেন তাকে এভাবে দেখার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না। একেবারে অস্বাভাবিক কথাবার্তা। থানায় বসে কী বলছেন না বলছেন তার ঠিক ছিল না। হাতিরঝিল থানায় উপস্থিত এই একাকে দেখে বিস্মিত হয়েছেন উপস্থিত সাংবাদিকরা।
নেটিজেনরাও লিখছেন, বলছেন, ‘একাকে এভাবে দেখব আমরা ভাবতেও পারছি না।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘একার এই পরিণতি কেন?’ তবে উত্তর সেভাবে পাওয়া যায়নি। অন্তরালেই বসবাস করছিলেন রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার উলনে।
চেহারায় শুধু মলিনতাই নয়, অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয়েছে। এক ঝলকেই কেউ চিনতেই পারবে না এই একাই ‘তেজী’র মতো সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন। তোজাম্মেল হক বকুল পরিচালিত ‘রাখাল রাজা’ ছবির মাধ্যমে শাহিদা আরাবী সিমন নাম নিয়ে ঢাকার চলচ্চিত্রে তিনি অভিষিক্ত হয়েছিলেন। সেটি ১৯৯৭ সালের ঘটনা। পরের বছরই প্রয়াত সুপারস্টার মান্নার জুটি হিসেবে ‘তেজী’ ছবির মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারের তেজ বাড়ান তিনি। তত দিনে একা নাম ধারণ করে নিয়েছিলেন। বলা যায়, ডিপজল প্রযোজিত এবং কাজী হায়াৎ পরিচালিত তেজী ছবিটিই একাকে চিত্রনায়িকা হিসেবে তারকা খ্যাতি এনে দেয়।
পরে নিজের সমসাময়িক প্রায় সব তারকা নায়কদের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করে হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন একা। সবচেয়ে সফল ছিলেন নায়ক মান্নার সঙ্গে। মান্নার সঙ্গেই টানা ২০-২৫টির মতো ছবি মুক্তি পায় একার। ওই সময় এ জুটিকে লুফে নিয়েছিল সিনেমার দর্শক। মান্নার মৃত্যুর পর রুবেল, অমিত, আমিন খান, আলেকজান্ডার বো, শাকিল খান, ফেরদৌস, শাকিব খান সবার সঙ্গেই অভিনয় করে সাফল্য পেয়েছেন এ নায়িকা।
কিন্তু ২০১২ সালের পর অনেকটা হুট করেই চলচ্চিত্র জগৎ থেকে একা দূরে সরে যান। তার সর্বশেষ সিনেমা কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘পাগলা হাওয়া’ মুক্তি পায় ২০১২ সালে।
কারণ হিসেবে একা ২০১৯ সালে বলেছিলেন, ‘যেহেতু মান্না ভাইয়ের সঙ্গে আমার সফল জুটি গড়ে উঠেছিল তাই ওনার চলে যাওয়ার পর বেশ ভুগতে হয়েছে আমাকে। অনেকের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছি মান্না ভাই মারা যাওয়ার পর। কিন্তু তেমন করে কারো সঙ্গেই জমে ওঠেনি।
সিনেমা হিট করেছে। কিন্তু দেখতে পাচ্ছিলাম চারদিকে একটা ষড়যন্ত্র চলছে। শেষ পর্যন্ত নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। মান্না ভাইয়ের মৃত্যুর পর অনেক ছবির অফার ছিল। শাকিব খানের সঙ্গে ৮-১০টির মতো ছবিতে কাজ করেছি। তখন প্রায় সব সিনেমাই হিট হতো। শাকিবসহ অন্য নায়কদের সঙ্গে যেসব ছবি করেছি সেগুলো কিন্তু হিট ছিল। অনেক ছবি এখনো পড়ে আছে, যেগুলো মুক্তি পায়নি। কিছু ছবি আছে যেগুলোর কাজই শেষ হয়নি।’
তবে শোনা যায়, বিয়ের পর অনুষ্ঠান হয়নি একার। সেটা নিয়ে আক্ষেপ করেছিলেন। এরপর সে বিয়ে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যায়নি।
এরপর প্রায় ছয় বছরের বিরতি দিয়ে ২০১৮ সালে আবার কিছু সিনেমায় কাজ করেন তিনি। সেগুলো মুক্তির অপেক্ষায়। কাজ করেছেন ছোট পর্দায়ও। বিভিন্ন সোশ্যাল টেলিভিশনে মাঝেমধ্যে দেখা দিলেও সেই অর্থে এ সময়ের দর্শকদের আকৃষ্ট করতে পারেননি একা।