ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য উপযোগী মানব সম্পদ তৈরি করতে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য। সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশনের আওতায় না আসলে সুফল পাওয়া যাবে না। আর এজন্য শিক্ষার ডিজিটাইজেসন প্রক্রিয়া শিশু শ্রেণী থেকে শুরু করা উচিৎ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভলান্টারি সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের আয়োজনে এবং প্রথম আলোর সহযোগিতায় টেকনোলজি ড্রাইভেন ইন এডুকেশন অ্যান্ড ভিএসও স্কুল অ্যাপ: স্কোপ অ্যান্ড ফিউচার’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় মন্ত্রী আজ রোববার এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) প্রতিষ্ঠাতা মুনীর হাসান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. জাহিদ হাসান ও এটুআই কর্মকর্তা আফজাল হোসেন সারোয়ারসহ অংশীজনেরা বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভিএসও লিড টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার পূর্ণ শ্রেষ্ঠ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শিক্ষাকে ডিজিটাল রূপান্তরে তার দীর্ঘ ২১ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, শিক্ষাকে কেবল শ্রেণিকক্ষে বা পাঠ্যপুস্তকে সীমিত রাখলে প্রকৃত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নতুন প্রজন্ম ঘরে বসেই পার করছে দিন। এই সময়ে ইন্টারনেট তাদেরকে সহায়তা করছে। প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রমের ডিজিটাল কন্টেন্টের প্রণেতা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, পাঠ্যক্রম ও পাঠ্য বই যেভাবে কেন্দ্রিয়ভাবে প্রণয়ন করা হয় তেমনি করে পাঠ্যবই এর ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরির কাজটিও করা উচিৎ। শিক্ষকদের ওপর পাঠ্যবই এর কনটেন্ট তৈরির দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। তারা পাঠ্য বইয়ের বাইয়ের কনটেন্ট তৈরি করতে পারে। ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিদ্যমান এক বছরের পাঠ্যক্রম মাত্র ৩ মাসে সম্পন্ন করতে সক্ষম এবং নেত্রকোণার পূর্বধলায় পরিচালিত একটি ডিজিটাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা তার বড় দৃষ্টান্ত বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। শিশু শিক্ষার্থীরা আগ্রহ এতে অনেক গুণ বৃদ্ধি পায় এবং আনন্দের সাথে পাঠ্যক্রম অনায়াসে অল্প সময়ে সম্পন্ন করার পর বছরের বাকী সময় পাঠ্যক্রম বহির্ভূত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় যা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে নিজেদের তৈরি করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে সামাজিক দায়বদ্বতা তহবিলের অর্থায়নে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি পাইলট প্রকল্প শুরু করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডার । শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেটের জন্য খরচ ব্যয় নয়, এটি একটি বিনিয়োগ। করোনাকালে দেশের মানুষের জীবনযাত্রায় ডিজিটাইজেশনের ব্যাপকতা বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকারের সেবাগুলো ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিয়ে আসার কারণে এখন কোনো কাজ ফেলে রাখতে হচ্ছে না। মিটিংসহ অন্যান্য কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনকে আগামী প্রজন্মকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেন।