করোনাভাইরাস মহামারিতে দেশের শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ায় সর্বনাশ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
জাফর ইকবাল বলেন, ‘করোনাকালে কী সর্বনাশ যে হয়েছে, সেটা খুব ভালো করে জানি। এখন সবাই বলছেন সর্বনাশ! বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন দেওয়া যাবে না। অথচ করোনাকালে সবার হাতে একটা স্মার্টফোন তুলে দিয়েছি আমরা। সে স্মার্টফোন আর হাত থেকে নামেনি। এখনো আছে তাদের হাতে। সেটা দিয়ে কাজের কাজ কী হচ্ছে, সেটা আমি জানি না। এটা দিয়ে আমরা সর্বনাশ করেছি।’
ফেসবুক ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের বাড়ন করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘আমি ফেসবুকের খুব বিরোধী। কারণ একটাই মাত্র জীবন। এটাকে তো নষ্ট করা যাবে না। আমি যদি বসে বসে একটা স্ক্রিনে তাকিয়ে দুনিয়া দেখি, সেটা কিছু হলো কি না? দুনিয়া কত সুন্দর, সেটা নিজের চোখ দিয়ে দেখবো নাকি শুধু স্ক্রিনে যতটুকু দেখাবে সেটা দেখব?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতাম। শিক্ষার্থীদের বলতাম, ক্লাসে আমরা যেটুকু তোমাদের শেখাই, সেটা হলো পাঁচ শতাংশ। বাকি ৯৫ শতাংশ তোমাদের আশপাশ দেখে জীবনের জন্য শিখতে হবে। তাহলে তুমি সত্যিকারের শিক্ষার্থী হবে। তোমরা ফেল করেছো মানে ওই ৫ শতাংশে আটকা পড়েছ। বাকি ৯৫ শতাংশে তোমরা আটকা পড়োনি।’
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, অভিনেতা ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, সংগীতশিল্পী রাহুল আনন্দ, এভারেস্ট বিজয়ী এম এ মুহিত প্রমুখ।