ভর্তিযুদ্ধ ও তদবির বন্ধে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ রবিবার রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) মিলনায়তনে ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান।
আজ বিকেলে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির কেন্দ্রীয় লটারি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর সরকারি মাধ্যমিকে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাইয়ে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভর্তির ক্ষেত্রে আগে আমরা যা দেখতাম, সেটা ভর্তিযুদ্ধ। ভর্তি নিয়ে বাবা-মায়ের যে যুদ্ধ; ছোট ছোট শিক্ষার্থী যারা ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হবে তাদের জোর করে মুখস্থ করাচ্ছেন, বাবা-মা নিজেরাও মুখস্থ করছেন। এই রকম একটা ভর্তিযুদ্ধের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। যেসব নেতিবাচক চর্চাগুলো রয়েছে তা থেকে বেরিয়ে ইতিবাচক দিকে আসতে চাইছি। সবচেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী সব এক স্কুলে। তার চেয়ে নানা ধরনের মেধার শিক্ষার্থী একসঙ্গে থাকলে আমরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারব।’
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ তো হয়ই, আমাদের ওপরও যুদ্ধ চলে আসে। সব কিছু পড়ে বেশি নম্বর পেয়ে স্কুলে ভর্তি হতে হয়, তাহলে স্কুলের কৃতিত্বটা কী? কম নম্বর পাওয়া একজন শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে সে বেশি নম্বর পেলে এটাই শিক্ষকের কৃতিত্ব। এ ছাড়া বেশি নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে বেশি নম্বর পাওয়ালে তাতে শিক্ষকের আত্মতৃপ্তির জায়গা থাকে না।’
ভর্তির যুদ্ধ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিশুদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ থাকে। একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি অনৈতিক বিষয়ও জড়িয়ে যায়। অনেক রকম তদবিরের চাপ থাকে। পুরো এই নেতিবাচক চর্চা সেটা দূর করার জন্য আগে থেকেই ভাবছিলাম, কী করে এ থেকে উত্তোরণ করব। ঠিক সেই সময় এসে গেল করোনা। করোনা না এলেও আমরা লটারির কথা ভেবেছিলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত বছর লটারি করার পর অধিকাংশ জায়গা থেকে ফোন এসেছে। দু-চারটি জায়গা ছাড়া সবাই এতে খুশি। এতে সমতা তৈরির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এটা যেহেতু চালু হয়েছে, প্রতিবছরই এটা থাকবে। গত বছর করা হয়েছিল মহানগরে। এবার জেলা পর্যায়ে লটারি করা হয়েছে। উপজেলাগুলো লটরির আওতায় আনিনি। আগামীতে সব প্রতিষ্ঠান লটারির আওতায় আসবে।’