শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি আজ ১১তম বাংলাদেশ জাতীয় ফিজিস্ক অলিম্পিয়ার্ড সমাপনী পর্বের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা সারাদেশের সব শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ছড়িয়ে দিতে হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান বিষয় পাঠ্যসূচির মধ্যে থাকবে আমরা সেটি পড়ব, মুখস্ত করে পরীক্ষার খাতায় লিখবো, ভালো নম্বর পাবো আর আমাদের বহু বাবা-মায়েরা গর্ববোধ করবেন যে, আমার ছেলেমেলো ভালো শিখছে। সে জায়গা থেকে বেরিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের সত্যিসত্যি বিষয়গুলোকে নিয়ে চর্চা করা বুঝতে পারা, এই বিষয়ের মধ্যে যে আনন্দ আছে সেটা উপভোগ করা প্রয়োজন। ফিজিক্স অলিম্পিয়ার্ড সেটি তৈরি করেছেন। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যতরকম ঘাটতি ও বৈকল্য আছে সেগুলোকে চিহ্নিত ও দূর করার ক্ষেত্রে অলিম্পিয়ার্ডগুলোর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।’
দীপু মনি বলেন, ‘আমরা একেবারেই যে শ্রেণিকক্ষে আনন্দ দেখতে পাই না তা নয়, তবে যে রকম আনন্দ দেখতে চাই সেরকমটা পাই না। পড়াশোনা মানেই ভয়, পরীক্ষা, চাপ, জিপিএ-ফাইভ নিয়ে উন্মাদনা বাবা-মায়েদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা, মনে হয় অসুস্থ প্রতিযোগিতা। কিন্তু সারা পৃথিবীতে যত সফল মানুষ রয়েছেন— তারা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে সফল হয়েছেন, এটি মনে করার কারণ নেই। বহু মানুষ প্রতিষ্ঠানিক কোনও পরীক্ষাই দেননি। তার মানে এই নয় যে আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাসের দরকার নেই। আজকাল বাচ্চাদের পড়তে বললে নাকি বলে—বিল গেটস তো পরীক্ষাই শেষ করেননি, রীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো প্রতিষ্ঠানিক কোনো ডিগ্রি অর্জন করেননি। কিন্তু আমরা সবাই তো রীন্দ্রনাথ বা বিল গেটস হবো না। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকেই ভালো মানুষ হবে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করবে, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চা করবে। যার যে বিষয়ে ভালো লাগে সে বিষয় চর্চা করবে। আগ্রহ নিয়ে কোনও বিষয় জানবে। নিজের জীবনে যেখানে শিক্ষা প্রয়োগ করা দরকার করবে। শিক্ষায় চাপচাপি, উৎকণ্ঠা নিরানন্দ শিক্ষা থেকে আমাদের উত্তোরণ প্রয়োজন।’
বিজ্ঞান চর্চায় শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা সত্যেন বোসের নাম শুনলাম। তোমাদের মধ্যে অনেক সত্যেন বোসকে খুঁজে পেতে চাই আমরা। বড় বড় সাহিত্যিক, বিজ্ঞানি খুঁজে পেতে চাই।’