পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার নেহালগঞ্জ গ্রামের ইব্রাহিম সরদারের ছেলে রাকিব। নেহালগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে রাকিব বাবাকে ফোন দিয়ে পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়েছিল। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় হঠাৎ বাবার মৃত্যুর খবর এলো।
রোববার (৩০ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান থেকে বাবার লাশ আসে বাড়িতে। আর বাবার সেই লাশ বাড়িতে রেখে চোখের জল মুছতে মুছতে পরীক্ষা কেন্দ্রে অংশ নিতে হলো রাকিবকে।
জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় বান্দরবানের বাসায় আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান ইব্রাহিম সরদার। রোববার সকালে বান্দরবান থেকে তার লাশ নেহালগঞ্জ গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ অবস্থায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসে রাকিব।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাকিব পরীক্ষার খাতায় লিখছে আর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছে বাবা আর নেই! বাবা আর কখনোই আমাকে আদর করে ডাকবে না! বাবার স্বপ্ন ছিল অনেক বড় হব। তাই আমি পরীক্ষা দিতে এসেছি। আমি সহ্য করতে পারছি না। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বন্ধুদের চোখেও পানি চলে আসে। রাকিবের কান্না হৃদয় ছুঁয়ে গেছে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
রাকিবের মামা ইমাম হোসেন বলেন, রাকিবকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর জন্য সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসি। বাড়িতে রাকিবের জন্য তার বাবার লাশ অপেক্ষা করছে। রাকিব পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরলে তার বাবার লাশ দাফন করা হবে।
নেহালগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনির হোসেন বলেন, রাকিব এই বিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগের মেধাবী ছাত্র। পড়াশোনায়ও ভীষণ মনযোগী।
পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মো. সালাউদ্দিন সৈকত বলেন, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে কষ্ট চেপে রেখে সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আমি তার প্রতি সমবেদনা জানাই। আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দিক। রাকিব অনেক বড় হোক এই কামনা করি।