করোনাকালে টানা বিধিনিষেধে ঘরে বসে থাকা, কর্মহীনতাসহ বিভিন্ন কারণে হতাশা-বিষন্নতা অনেক বেশি জেঁকে বসছে মানুষের মনে। মনোবিদসহ অনেকের পক্ষ থেকে এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে বারবার। দেশে সাম্প্রতিক আত্মহত্যার প্রবণতা এবং এর সম্ভাব্য কারণ মনোবিদদের সে কথাগুলোকেই সামনে নিয়ে আসছে।
গত এক সপ্তাহে দেশে বেশ কিছু আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে চারজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনই আলাদা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এ চার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর মেলে।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পা রেখেও জীবনযুদ্ধের মাঝপথে থেমে যাওয়া চার শিক্ষার্থী হলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ইমরুল কায়েস, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) তাহমিদুর রহমান জামিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের (সাবেক) মাসুদ আল মাহাদী (অপু) এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী অমিতোষ হালদার।
এর মধ্যে ইমরুল কায়েস গত ২৩ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত ৩টার দিকে যশোরে ঝিকরগাছায় গ্রামের বাড়িতে ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি রাবির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ইমরুলের সহপাঠী আরিয়ান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেন ইমরুল। ঘটনার কিছুদিন আগে মায়ের কাছে মোটরসাইকেল চেয়েছিলেন তিনি। কিনেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আত্মহত্যার আগে তিনি একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু মধ্যরাতে ক্যামেরা কিনতে যাওয়া যাবে না বলে মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এরপর ইমরুল দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দেন।
২৩ সেপ্টেম্বর রাতেই পাবনা শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে তাহমিদুর রহমান জামিলের (২২) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার মরদেহের পাশ থেকে ‘বাবা-মা ক্ষমা করো, গুড বাই’ লেখা চিরকুট পাওয়া যায়।