রাজধানীর পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার (১ এপ্রিল)। ওইদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা চলবে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
এরইমধ্যে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও নকলমুক্ত রাখতে পরীক্ষা কেন্দ্রে সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হবে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন না। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে মোবাইল কোর্ট।
সোমবার (২৮ মার্চ) ডিএমপি সদরদপ্তরে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। সভায় উল্লিখিত নির্দেশনাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মাস্ক পরে কেন্দ্রে আসার জন্য বিশেষ নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। কেউ মাস্ক না পরে এলে মাস্ক সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সমন্বয় সভায় বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশ। পরীক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ছাড়া অন্য কোনো কাগজ সঙ্গে নিতে পারবেন না। সকাল ৮টায় কেন্দ্রের গেট খুলে দেওয়া হবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। সাড়ে ৯টার পর কেন্দ্রের গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় সব পরীক্ষার্থীর দেহ তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হবে। কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন না। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে মোবাইল কোর্ট।
পরিস্থিতি বিবেচনায় মেডিকেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হবে। যেন তারা ১ এপ্রিল সকাল ৮টার মধ্যে কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত থাকতে পারেন।
ঢাকা মহানগরীতে আগামী শুক্রবার ১৮টি কেন্দ্রে মোট ৬১ হাজার ৬৭৮ জন পরীক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
কেন্দ্রগুলো হলো- ঢাকা মেডিকেল কলেজ (৯টি কেন্দ্র): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবন; লেকচার থিয়েটার ভবন; বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবন; সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ; মোকারম হোসেন, বিজ্ঞান ভবন; এ.এফ মুজিবুর রহমান, গণিত ভবন, বিজ্ঞান ভবন; কাজী মোতাহার হোসেন ভবন; উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, বকশি বাজার, ঢাকা।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (৩টি কেন্দ্র): ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ ও নিউ মডেল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ (২টি কেন্দ্র): তেজগাঁও কলেজ, ইন্দিরা রোড, ঢাকা ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। মুগদা মেডিকেল কলেজ (২টি কেন্দ্র): আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল ক্যাম্পাস, ঢাকা ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মুগদা ক্যাম্পাস, ঢাকা। ঢাকা ডেন্টাল কলেজ (২টি কেন্দ্র): সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা ও সরকারি বাঙলা কলেজ, মিরপুর, ঢাকা।
সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারসহ পাঁচটি মেডিকেল কলেজ ও ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রের প্রতিনিধি, ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মোট ১০৭টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এতে মোট আসনসংখ্যা ১০ হাজার ৬৯৭টি। তার মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি এবং বেসরকারি ৭০টি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে ৬ হাজার ৩৪৭টি।
মেডিকেল ভর্তি বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত বছরের মতো এবারও ১০০ নম্বরের ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। প্রতিটির প্রশ্নের মান ১। এমসিকিউ পরীক্ষা হবে ১ ঘণ্টায়। পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নে ২৫, জীববিজ্ঞানে ৩০, ইংরেজিতে ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ১০ নম্বর (মোট ১০০) থাকবে।
লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূণ্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ পেতে হবে। এর কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। কেবল কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধাতালিকাসহ ফলাফল প্রকাশ করা হবে।