উপনির্বাচন আগেও হয়েছে, বিএনপির প্রার্থীরা আগেও হেরেছেন; কিন্তু কখনো এমন আগুন সন্ত্রাস হয়নি। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচন কেন্দ্র করে রাজধানীতে ১১টি বাস পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে নির্বাচনের ফল প্রকাশের অনেক আগে, মূলত দুপুরের দিকে। নির্বাচনে কোথাও কোনো সংঘর্ষ বা হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। তাহলে হঠাৎ এমন আগুন সন্ত্রাস কেন? নিঃসন্দেহে এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য কাজ করেছে। শুক্রবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাস পোড়ানোর ঘটনার পেছনে কারা আছে, তার অনেক তথ্যই সরকারের হাতে এসেছে। এসব ঘটনায় কারা পেছনে থেকে টাকা ঢালছে, তারও অনেক তথ্য গোয়েন্দারা এরই মধ্যে বের করেছেন। এদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
২০১৩-১৪ সালে ভয়াবহ আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অনেক অপচেষ্টা হয়েছিল। তাতে অনেক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। তা সত্ত্বেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। পাঁচ বছর ধরে দেশে সুন্দর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, দেশের সেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে পুরনো শক্তিগুলোই নতুন করে মাঠে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, এরা নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে বিতর্কিত করতে চাইছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপতৎপরতার বিষয়টিও বৈঠকে আলোচিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর সাবেক কিছু কর্মকর্তা বিদেশে বসে দেশবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিত্তিহীন গুজব ও কুৎসা রটাচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা অতীতে দেখেছি, সামাজিক মাধ্যমে গুজব রটিয়ে কিভাবে স্কুলশিক্ষার্থীদের দিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলার চেষ্টা করা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধী সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে এমন গুজব রটিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করা হয়েছে। কোনোভাবেই কোনো মহল যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে না পারে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ক্ষেত্রে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবারের আগুন সন্ত্রাসের ঘটনার পর থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা পরস্পরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এমন পারস্পরিক দোষারোপ আগুন সন্ত্রাসের ভয়াবহতা থেকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বরং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারী ও হামলার পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারির যে ঘাটতি আমরা দেখেছি, তা দূর করতে হবে। প্রশাসনের ভেতরে যাতে কোনো দুর্বলতা না থাকে এবং সবাই যাতে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন