লেখক হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন, ‘যতোই গভীরে যাই মধু, যতোই উপরে যাই নীল’। বাংলাদেশে এখন যত ওপরে যাওয়া যায়, তত নীল দুঃখের চিত্র, কিন্তু যতই নতুন প্রজন্মের গভীরে যাওয়া যায়, ততই মধু। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের ছেলেরা আবারও দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তারা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু শীর্ষস্থানই অর্জন করেনি, একটি রুপা ও পাঁচটি ব্রোঞ্জপদক জয় করে এনেছে। এ আনন্দের সুন্দর দিক এই যে বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেওয়া ছয়জন প্রতিযোগীই কোনো না-কোনো পদক পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
আরও চমৎকার ব্যাপার হলো ছয়জনের প্রতিযোগী দলে রাজধানীর তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিনজন এবং তিন জেলা ও বিভাগীয় শহরের ছিল তিনজন। এ থেকে বোঝা যায়, গণিত অলিম্পিয়াড যেমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে, তেমনি সারা দেশেই এর আবেদন ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন দিকে লাগাতার হতাশাজনক খবরের মধ্যে এটি এক গর্বের সুবাতাস বয়ে এনেছে। আর সেটা করেছে একদল গণিতপিপাসু শিক্ষক-সংগঠক এবং সর্বোপরি আমাদের কাঁচা প্রাণের তেজস্বী শিক্ষার্থীরা।
যদি পরিচর্যা পায়, যদি সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের কিশোর-তরুণেরা সত্যিই বিশ্বকে মেধা ও অধ্যবসায়ে তাক লাগাতে পারেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্র, সমাজ ও শিক্ষা-সংস্কৃতি ক্ষেত্রের নীতিনির্ধারকেরা যদি নতুন প্রজন্মের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেন, তাহলে অনেক তরুণ-তরুণীর স্বপ্নজয়ের চ্যালেঞ্জ সফল হতে পারবে।
বিশ্বের ১০৭টি দেশের তরুণদের নিয়ে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে পুরো আয়োজন অনলাইনেই সম্পন্ন করা হয়। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ সফলভাবে যোগ দিচ্ছে ২০০৫ সাল থেকে। সে অনুসারে ১৬তম বারের মতো অংশ নেওয়া হলো বাংলাদেশ গণিত দলের। এ সময় বাংলাদেশের অর্জন একটি সোনা, সাতটি রুপা, ২৮টি ব্রোঞ্জ ও ৩১টি সম্মানসূচক স্বীকৃতি। আর এবার অর্জিত হয়েছে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ নম্বর।
সারা বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সেরা গণিতবিদ নির্বাচন করে আনা হয়। এভাবে দেশসেরা ছয়জন অংশ নেয় এবারের গণিত অলিম্পিয়াডে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন