সন্ধ্যা নামলেই তারা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি করত। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় দেশি ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাত। মাদক সেবন ও কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিল। তাদের প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
সামাজিক, পারিবারিক ও আর্থিক বিরোধের জের ধরে তুচ্ছ কারণে মানুষ একে অপরকে হত্যা করছে।অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে পারিবারিক বন্ধনে ছন্দঃপতন ও প্রযুক্তির অপব্যবহারকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। সমাজ বিশ্লেষক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে সম্প্রতি সারা দেশে খুনখারাবির মতো অপরাধ বেড়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে অপরাধ করেও আইনের ফাঁকফোকর গলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পার পাওয়া বা বিচার থেকে রেহাই পাওয়ার বিষয়টিও এতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। অপরাধীর শাস্তি না হওয়া অপরাধ বৃদ্ধির আরেকটি বড় কারণ, যা অপরাধীকে অপরাধ করতে সাহস জোগায়, অন্যকেও অপরাধী হতে উৎসাহী করে।
সাম্প্রতিক সময়ে আরেকটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, প্রতিবাদের মুখে অপরাধী দ্রুত ধরা পড়ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত শাস্তি আর হচ্ছে না। নতুন নির্যাতনের ঘটনার আড়ালে পুরনো ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। অপরাধী নিশ্চিন্তে বিচরণ করছে।
আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন ঢিলে হয়ে গেছে অনেক আগেই। সমাজের ভেতর পরিবার, প্রতিবেশী, এলাকাভিত্তিক সংস্কৃতির চর্চা ও বন্ধনগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। অনুশাসন বলতে কিছু নেই। আগে সামাজিকভাবে প্রতিরোধের ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা ইদানীং দেখা যায় না। আগের সামাজিক অনুশাসনগুলো আর কাজ করছে না। উচ্চাভিলাষী জীবনযাপনে প্রতিযোগিতা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অন্যায়কারীর শাস্তি হলে তা দেখে অন্যরা অন্যায় কাজে নিরুৎসাহ হবে। আর সে কারণেই আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।