শুধু আম নয়, সংরক্ষণাগারের অভাবে আরো অনেক ফল ও কৃষিপণ্যের একই অবস্থা। মৌসুমে দাম এতটাই কমে যায় যে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিক্রি না করতে পারায় অনেক কৃষিপণ্য ফেলে দেওয়া হয়।
বাজারে বয়ে নিলে যে ভ্যানভাড়া দিতে হয়, অনেক সময় তা-ও ওঠে না। ক্রেতাই পাওয়া যায় না। অথচ মৌসুমের পর এসব পণ্যই অনেক গুণ বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।পেঁয়াজের দাম সেই যে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে আর নামতেই চাচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশে পেঁয়াজের যে চাহিদা তার চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদিত হয়।জানা যায়, বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ৩০ লাখ টনের মতো। অথচ গত মৌসুমে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ৩৬ লাখ টনের বেশি।কিন্তু সংরক্ষণ পদ্ধতি আধুনিক না হওয়ায় বছরে প্রায় ১০ লাখ টন পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ঘাটতি দাঁড়ায় পাঁচ লাখ টনের মতো। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে গত ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।আর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আমদানি হয়েছে পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার ৩২৭ টন পেঁয়াজ। তার পরও পেঁয়াজ আসছে, কিন্তু দাম কমছে না।প্রায় একই অবস্থা হয়েছিল আলুর ক্ষেত্রেও। আলুর কেজিপ্রতি দাম উঠেছিল ৭০/৮০ টাকায়। অথচ কোনো কোনো বছর মৌসুমে কৃষকদের ১০ টাকা কেজিতেও আলু বিক্রি করতে হয়। এতে তাঁদের উৎপাদন খরচও ওঠে না। অন্যান্য ফল এবং তরিতরকারির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।কৃষিবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা গেলে বাংলাদেশের কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ভোক্তারা সারা বছর আমসহ অন্যান্য ফল খেতে পারবে।পাশাপাশি ফল রপ্তানির উদ্যোগ বাড়িয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে। আমরা আশা করি, ফলসহ কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যাপ্ত সংরক্ষণাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।