সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ আরো অনেক দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশে ৩৭ শতাংশ, চীনে ৩৪ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৪ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৩২ শতাংশ, ভারতে ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা খুবই বেকায়দায় পড়বে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পণ্য নেয় তার ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি শুল্কারোপের ফলে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প।
চাপ সামলাতে না পারলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এই খাতে কাজ করে ৪০ লাখের বেশি মানুষ, যাদের বেশির ভাগই নারী। শ্রমিক নেতাদের মতে, অতিরিক্ত শুল্কারোপের ফলে এই শিল্পে সংকট তৈরি হলে প্রথমেই তার শিকার হবেন দরিদ্র শ্রমিকরা।অতীতেও দেখা গেছে, যখনই সংকট সৃষ্টি হয়, তখনই শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়। শ্রমিকদের মজুরি কাটছাঁট করা হয়। মালিকরা হয়তো সরকারের সঙ্গে দর-কষাকষি করে কিছু সুবিধা আদায় করে নিতে পারবেন, কিন্তু শ্রমিকদের দর-কষাকষির সুযোগও কমে যাবে। অবশ্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক ইস্যু সমাধানে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি।যেহেতু এটি আলোচনাযোগ্য, তাই আমরা আলোচনা করব এবং আমি নিশ্চিত যে আমরা সর্বোত্তম সমাধানে পৌঁছতে পারব।’
আমরাও মনে করি, বাংলাদেশের অর্থনীতির পাশাপাশি ৪০ লাখ সরাসরি শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোর স্বার্থে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন। পাশাপাশি রপ্তানি পণ্য বহুমুখী করতে হবে এবং আমাদের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করার ওপর আরো জোর দিতে হবে।