এ ঘটনায় ২৮ ফেব্রুয়ারি ডা. নিশাত সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। একই দিন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। অন্যথায় ১ মার্চ সকাল থেকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। আর ১ মার্চ সন্ধ্যায় এএসআই নাঈমের স্ত্রী ডা. নিশাতের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগে একই থানায় আরেকটি মামলা করেন।
এ ঘটনায় বিএমএ খুলনা শাখা গত বৃহস্পতিবার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার ও ‘হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সারা দেশেই এটি একটি কুসংস্কৃতি হয়ে উঠেছে। ভুল চিকিৎসা, উপযুক্ত মনোযোগ না দেওয়া কিংবা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে এক শ্রেণির মানুষ চিকিৎসকদের ওপর হামলা চালায়, হাসপাতালে ভাঙচুর করে কিংবা হাসপাতালের কর্মচারীদের মারধর করে।
এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। পুলিশের এএসআই একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তাঁর দায়িত্ব আইন রক্ষা করা, আইন নিজের হাতে নেওয়া নয়। ঘটনার চার দিন পর এবং নির্যাতিত চিকিৎসক মামলা করার এক দিন পর পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী থানায় মামলা করেছেন যে ওই চিকিৎসক তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন।
এমন মামলার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, নির্যাতিত চিকিৎসক মামলা করার আগে কেন তাঁরা মামলা করলেন না। তাঁরা মনে করেন, চিকিৎসকের মামলা এবং বিএমএর কর্মবিরতি ঘোষণার পর নিজেকে রক্ষার উপায় হিসেবেই তিনি স্ত্রীকে দিয়ে এই মামলা করিয়েছেন। তা ছাড়া চিকিৎসক যদি অশালীন আচরণ করেই থাকেন, তাহলে প্রথমেই তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন।
কোনোমতেই তিনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে চিকিৎসকের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতে পারেন না। এটিকে পুলিশের দায়িত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবেও দেখছেন অনেকে। জানা যায়, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকরা মনে করছেন, এটি যথেষ্ট নয়, তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।
খুলনায় তিন দিন ধরে শত শত রোগী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমরা মনে করি, রোগীদের স্বার্থে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিএমএ নেতারা বসে দ্রুত একটি সমাধানে আসা প্রয়োজন।