English

13 C
Dhaka
শনিবার, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
- Advertisement -

রিজার্ভ বাড়াতে ব্যবস্থা নিন: অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা

- Advertisements -
বাংলাদেশের অর্থনীতি গত পাঁচ দশকে যখনই উঠে দাঁড়াতে চেয়েছে, তখনই নানাভাবে ধাক্কা খেয়েছে। দারিদ্র্যরেখার ঠিক ওপরের অনেক মানুষ দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে গেছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের গায়েও সংকটের ঝাপটা লেগেছে। আবার বাংলাদেশ সেই সংকট থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে ডলারের অভাব। দীর্ঘদিন ধরে চলা ডলার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে নতুন করে ঋণপত্র (এলসি) খোলা প্রায় বন্ধ। আমদানিকারকরা ডলার সংকটে পুরনো বকেয়া পরিশোধেও হিমশিম খাচ্ছেন।
ব্যাংকের পাশাপাশি খোলাবাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না ডলার, যদিও ডলার সংকট নিরসনে আশার আলো দেখাচ্ছে সাম্প্রতিক রেমিট্যান্সপ্রবাহ। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে দেশে অস্থির পরিবেশ বিরাজ করছে। এর প্রভাবে দুর্বল অর্থনীতি আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে। যেকোনো মূল্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া জরুরি।
না হলে দেশজুড়ে অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো নাজুক হবে।
নতুন একটি সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। ঠিক এই সময়ে সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ কী? দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি একটি বড় সমস্যা। বলা চলে প্রধান সমস্যা। সীমিত আয়ের মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।
ওদিকে ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ। ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকটও প্রবল। রপ্তানি আয়ে ধীরগতির সঙ্গে আছে রেমিট্যান্সপ্রবাহে মন্থরতা। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে স্থবিরতাও একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যাগুলোর দ্রুত অবসান করতে হবে। অর্থনীতির গতি আনতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবক্ষয়, আমদানিতে ক্রমহ্রাসমান প্রবণতা, টাকার ব্যাপক অবমূল্যায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা তো আছেই। গত বুধবার এসব বিষয় নিয়ে সিপিডি একটি সংলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে সংস্থাটির পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়।

সিপিডি বলছে, সামাজিক খাত পুনর্গঠন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাভাবিক করে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমবাজারের চাহিদা ও দক্ষতার অসামঞ্জস্য দূর করার তাগিদও দিয়েছে সিপিডি। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ করছি, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল চার হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২১ মে পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪.০৯ বিলিয়ন ডলার। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলের আমদানি বিল পরিশোধের পর গত মে মাসে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যায়। আবার ঈদের আগে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয় বাড়ে। এ ছাড়া ডলারের রেট বাড়ায় রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ কিছুটা বাড়ে।

সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন এক ক্রান্তিকাল পার করছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মানে ধস নেমেছে। বৈদেশিক বাণিজ্যেও পড়েছে দেশজুড়ে চলা অস্থিরতার প্রভাব। দীর্ঘদিন ধরে চলা ডলার সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে নতুন করে ঋণপত্র (এলসি) খোলা প্রায় বন্ধ। আমদানিকারকরা ডলার সংকটে পুরনো বকেয়া পরিশোধেও হিমশিম খাচ্ছেন।

বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ না থাকলে অর্থনীতিতে সংকট সৃষ্টি হতে পারে। তাই রিজার্ভের পতন ঠেকানো এখন জরুরি কাজ। রিজার্ভ বাড়িয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন