মশার উৎপাত বেড়েছে রাজধানী ঢাকায়। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, কোনোভাবেই মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিবিসির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের এই সময়ের চেয়ে রাজধানীতে মশার ঘনত্ব বেড়েছে। শিগগিরই তা চরমে পৌঁছবে। শীতের শেষে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রকৃতিতে থাকা মশার ডিমগুলো একযোগে ফুটেছে। একই সঙ্গে নর্দমা, ড্রেন ও ডোবার পানি পচে গেছে।
বৃষ্টিপাত না হলে এবং পানি বহমান না থাকলে কিউলেক্স মশা জন্মানোর হার বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় এখন যে মশা আছে, তার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই কিউলেক্স মশা।
নর্দমা ও ডোবা পরিষ্কার এবং মশা নিয়ন্ত্রণের পুরো দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের নর্দমা ও ডোবার পানি চলমান করে দিতে হবে। একই সঙ্গে সেখানে লার্ভিসাইড, অ্যাডাল্টিসাইট কিংবা গাপ্পি মাছ ছাড়তে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে র্যাপিড অ্যাকশনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, উভয় সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি জায়গায় যেখানে পানি রয়েছে, সেখানে একযোগে লার্ভা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে ডোবা-নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। একই সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক মশা দমনে ফগিংয়েও গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
আমরা সব সময় দেখে থাকি, বর্ষা ও বর্ষা-পরবর্তী সময়ে এডিস মশার উৎপাত বাড়ে। এখন ঢাকায় এডিস মশা তেমন একটা দেখা না গেলেও বর্ষার সময় মশার উৎপাত কোন পর্যায়ে যাবে, তা এখনকার পরিস্থিতি থেকেই বুঝতে পারা যায়। এডিস মশা যে ডেঙ্গু রোগের বাহক, তা আমাদের সবারই জানা। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলেও মশা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কোনো বিকল্প নেই। এবার বর্ষা শুরুর আগেই যে হারে মশা বেড়েছে, তাতে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার উৎপাত বাড়বে।
এ ছাড়া স্থায়ীভাবে মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে বছরব্যাপী সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। রাজধানীর মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি নাগরিকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আসছে বর্ষা মৌসুমে ডোবা-নালায় যাতে কোনোভাবে পানি-ময়লা না জমে, সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া দরকার।