দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বড় অংশের মানুষকে যাতায়াতের জন্য নির্ভর করতে হয় ফেরিব্যবস্থার ওপর। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এখন বাড়তি চাপ পড়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটের ওপর। কিন্তু ঘাটসংকট ও ফেরির অপর্যাপ্ততার কারণে যানবাহন পারাপার মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
নৌ রুটের উভয় প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে আছে। প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, গত সোমবার পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের সারি ছিল সাড়ে তিন কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চালকদের। অনেকে সিরিয়াল পেতে দু-তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছেন। এর মধ্যে ঘাট এলাকায় না আছে নাওয়া-খাওয়ার সুবিধা, না আছে টয়লেটের সুযোগ। ফলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু এই সমস্যার সমাধানে ঘাট বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন সম্পূর্ণ নির্বিকার।
জানা যায়, পাটুরিয়ায় মোট পাঁচটি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে চালু আছে মাত্র দুটি ঘাট—৩ ও ৪ নম্বর ঘাট। গত সপ্তাহে রো রো ফেরি শাহ আমানত যানবাহনসহ ডুবে যাওয়ায় ৫ নম্বর ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরিটি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই ঘাটটি চালু করা যাবে না। কোনো এক অদৃশ্য কারণে ২ নম্বর ফেরিঘাটটি সারা বছরই বন্ধ থাকে।
আর ১ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ রয়েছে নাব্যতা সংকটের কারণে। ফেরিগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। বেশির ভাগ ফেরিই মেয়াদোত্তীর্ণ। কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। সে কারণে অনেক সময়ই অনেক ফেরি বন্ধ রাখতে হয়। সীমিত ফেরি পারাপারে যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেট কারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সমস্ত ভোগান্তি এসে পড়ে ট্রাকচালকদের ওপর। বছরের পর বছর ফেরিঘাটগুলোতে এমন ভোগান্তির চিত্র আমাদের দেখতে হচ্ছে, যা কোনোমতেই কাম্য নয়।
আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মানুষের ভোগান্তি আমলে নেবেন। ডুবে যাওয়া ফেরিটি দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। ১ নম্বর ঘাটের নাব্যতা সংকট দূর করে ঘাটটি দ্রুত চালু করুন। ২ নম্বর ঘাটটি এমন জরুরি অবস্থায়ও বন্ধ না রেখে দ্রুত চালুর ব্যবস্থা করুন। পাশাপাশি ঘাটে অপেক্ষমাণ চালক, শ্রমিক ও যাত্রীদের জন্য বাথরুম ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করা জরুরি।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন