শ্রম আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর পর পর মজুরি বাড়ানোর নিয়ম রয়েছে। সে অনুযায়ী পাঁচ বছর পূর্ণ হবে এ বছরের নভেম্বর মাসে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে পারে সরকার। তারই ভিত্তিতে সরকার এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন তৈরি পোশাক কারখানার মালিকরা। তাঁরা বলছেন, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় কার্যাদেশ কম হওয়ায় তাঁরা কিছুটা বিপাকে আছেন।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসা সংকটের মুখে পড়বে। পাশাপাশি এটাও তো সত্য যে ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা লাভবানও হয়েছেন। পাঁচ বছর আগে প্রতি ডলার ছিল ৭৮ টাকা, বর্তমানে ১০৬ টাকা হয়েছে। তাঁরা আগে ১০০ ডলারের পণ্য বিক্রি করলে দেশীয় মুদ্রায় পেতেন সাত হাজার ৮০০ টাকা, এখন পাচ্ছেন ১০ হাজার ৬০০ টাকা। এর চেয়েও বড় কথা, শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারলে তবেই তো কাজ করবেন। শ্রম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্রুত শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো না হলে নানাভাবে তা উৎপাদনশীলতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
অন্যদিকে বাজার যেন তেজি ঘোড়া। শুধুই লাফাচ্ছে। প্রকাশিত অন্য এক খবর থেকে জানা যায়, আসন্ন রমজান উপলক্ষে বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা শুরু হয়ে গেছে। রমজানে বেশি প্রয়োজন হয় এমন পাঁচটি পণ্য হচ্ছে সয়াবিন তেল, চিনি, ছোলা, ডাল ও খেজুর। পণ্যগুলোর সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এর পরও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানিসহ নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অথচ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে এই পণ্যগুলোর মূল্যবৃদ্ধির অশুভ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। শুধু এই পণ্যগুলোই নয়, মাছ, মাংস, মুরগি, ডিম, মসলাসহ প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম বাড়ছে। ফলে শুধু পোশাক শ্রমিকরাই নয়, স্থির আয়ের প্রত্যেক মানুষই আজ বিপদগ্রস্ত, বিপর্যস্ত। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মজুরি বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণেরও উদ্যোগ নিতে হবে। অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে হবে। আমরা আশা করি, মূল্যস্ফীতির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।