English

25 C
Dhaka
বুধবার, জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
- Advertisement -

মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নিন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

- Advertisements -
দেশে উচ্চশিক্ষার করুণ দশা অনেক দিন ধরেই। কি সরকারি, কি বেসরকারি—সব বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার মান দ্রুত নিম্নগামী হচ্ছে। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও এখন বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকে না। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রায় অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি পাকিস্তানেরও সাত-আটটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকে হাজারের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের এমন অধোগতি সত্ত্বেও নিকট অতীতে নতুন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলেছে। প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিরা নিজ নিজ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে নিজেদের প্রভাব কাজে লাগিয়েছেন। আর তারপর চলেছে মহাদুর্নীতি। ফলে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু উচ্চশিক্ষার মান বাড়েনি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ২০২১ সালে। তখন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ডা. দীপু মনি। তাঁর বাড়ি এবং সংসদীয় এলাকাও চাঁদপুর। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণে তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
একইভাবে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা খাতে বড় ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, যার পেছনে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা। অভিযোগ আছে, লোকবল নিয়োগেও ছিল ব্যাপক দুর্নীতি। ঘুষ নেওয়া হতো স্কেল অনুযায়ী। যত টাকা স্কেলের চাকরি, তত লাখ ঘুষ। প্রথম শ্রেণির চাকরিতে ২২ হাজার টাকার স্কেল, আর এর জন্য ঘুষের রেট ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা।

দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৫ লাখ, তৃতীয় শ্রেণির চাকরি পেতে আট থেকে ১০ লাখ এবং চতুর্থ শ্রেণির চাকরি পেতে ঘুষের রেট পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। আর এই টাকার বেশির ভাগ গেছে এমপি-মন্ত্রীর পকেটে। দুর্নীতির সহযোগী ছিলেন অনেক উপাচার্যও।

দেশে এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬১। এর মধ্যে আটটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যথাযথ পরিকল্পনার অভাব ছিল। তা ছাড়া এত সংখ্যায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনই ছিল না, বরং প্রয়োজন ছিল কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রসারের, যাতে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিসহ সারা পৃথিবীর প্রযুক্তিগত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আজ ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জয়জয়কার। এটি সম্ভব হয়েছে ভারতের পরিকল্পিত শিক্ষা উদ্যোগের কারণে। আমাদেরও সেভাবেই এগোতে হবে।

আমরা মনে করি, নতুন ও পুরনো সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন