দেশের কারাগারগুলোর পরিবেশ ও খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যে খাবার দেওয়া হয়, তা মুখে তোলা যায় না। এ অভিযোগ জামিনপ্রাপ্তদের। তাঁরা বলছেন, খাবার হিসেবে দুই দিন সকালে দেওয়া হয় খিচুড়ি, পাঁচ দিন রুটি ও সবজি। দুপুরে ভাত, সবজি ও ডাল এবং রাতে ভাত, মাছ বা মাংস।
এ ছাড়া বিশেষ দিনগুলোতে সকালে পায়েস ও মুড়ি, দুপুরে ভাত ও রুই মাছ এবং রাতে পোলাউ, গরু বা খাসির মাংস। জামিনপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, সপ্তাহে সকালে দুই দিন খিচুড়ি খাওয়া গেলেও বাকি দিনগুলোর রুটি খাওয়ার উপযোগী নয়। দুপুরে ভাতের সঙ্গে যে সবজি দেয়, তা খাওয়ার অযোগ্য। আর রাতে মাছের সঙ্গে যে ডাল-সবজি দেয়, তা মুখে তোলা যায় না।
দেশের সব কারাগারের বন্দিদের জন্য সরকার নির্ধারিত খাবারের তালিকা আছে। একসময় সকালে শুধু রুটি আর গুড় বা চিনি দেওয়া হতো। এখন আর সেটা নেই। বর্তমানে সকালে খিচুড়ি দেওয়া হয় দুই দিন, আবার হালুয়া-রুটি দেওয়া হয় দুই দিন। রুটি-সবজি দেওয়া হয় তিন দিন। দুপুরে ভাত, সবজি, ডাল থাকে। রাতের খাবারে ভাত, সবজি, ডাল, মাছ বা মাংস থাকে। হাজতিদের যে খাবার দেওয়া হয়, সেটা কয়েদিদেরও দেওয়া হয়ে থাকে।
ব্রিটিশ আমল থেকে কারাবন্দিদের সকালের নাশতার জন্য বরাদ্দ ছিল রুটি ও গুড়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খাবারে পরিবর্তন আনা হয়। বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৯ সালে খাবার পরিবর্তন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, খাবারের মানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। কারাগারের খাবার নিয়ে অনেক অভিযোগও রয়ে গেছে। কারা কর্মকর্তাদের যোগসাজশে চাল-ডাল-সবজি-মাছ-মাংস সরবরাহে নানা কারসাজির অভিযোগও আছে। বরাদ্দ ঠিক রেখে কম দামের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কারাবন্দিদের জন্য বরাদ্দ করা খাবার অনুযায়ী টাকাও বরাদ্দ করা আছে। সাধারণ কয়েদি বা হাজতিদের জন্য বরাদ্দ এক রকম। আবার ভিআইপি বা ডিভিশনপ্রাপ্তদের জন্য বরাদ্দ আলাদা। এই বরাদ্দ নিতান্ত কম নয়। কিন্তু খাবার মানসম্মত হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খাবারের মান বাড়ানোর বিষয়ে দৃষ্টি দেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন