করোনাকালেও থেমে নেই সর্বনাশা মাদকের কারবার। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়েছে ভয়ংকর ক্ষতিকর মাদকদ্রব্য। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে মাদক সিন্ডিকেট। দেশের তরুণসমাজ মাদকে আসক্ত হচ্ছে। আবার শহরেও মাদক সিন্ডিকেট জাল বিস্তার করছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকায়ও মাদকের ছড়াছড়ি। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়ে কুরিয়ার সার্ভিস ও হোম ডেলিভারি সার্ভিস ব্যবহার করা হচ্ছে মাদক পৌঁছানোর কাজে। অনলাইনেও মাদকের হাট বসে বলে খবরে প্রকাশ। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ‘হাউস পার্টি’র আয়োজন করে ধনাঢ্য পরিবারের তরুণ সদস্যদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। এসব হাউস পার্টিতে সিসা, মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সেবনের ব্যবস্থা থাকে। অসতর্ক মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিং করা হচ্ছে তাদের। প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে মাদকের আখড়া থেকে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে রাজধানীর এ রকম ৪০টি ফ্ল্যাটের তথ্য আছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া মডেল বা নায়িকা পরিচয়ের অন্তত ১২ জনের তালিকাও রয়েছে তদন্তসংশ্লিষ্টদের কাছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। অভিভাবকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সেই জিরো টলারেন্স নীতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বাস্তবায়ন করলেই মাদক নির্মূল করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। আশার কথা, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মাদক ও মাদকের কারবারিদের বিরুদ্ধে জোর তৎপরতা শুরু করেছে। অতীতে আমরা দেখেছি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযানে ছোট কারবারিরা ধরা পড়লেও গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। অন্যদিকে মাদকে দ্রুত কাঁচা টাকা আসে বলে বেকার তরুণদের পাশাপাশি অনেক ছোটখাটো ব্যবসায়ীও মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার এমন অভিযোগও আছে যে মাদক ব্যবসার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর এক শ্রেণির সদস্যসহ স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও জড়িত রয়েছেন।
মাদকের কারবার বন্ধ করা না গেলে সমাজের সব ধরনের স্থিতিই নষ্ট হবে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী গত কয়েক দিনে মাদকের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কঠোর অবস্থানই পারে মাদক নির্মূলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে। অভিযান অব্যাহত থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।