মানুষ কতটা বিবেকহীন, কতটা নিষ্ঠুর হলে এমন কাজ করতে পারে! রাজশাহীর বাঘমারায় সড়কের পাশে লাগানো অর্ধশত তালগাছ বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা এবং একটি দাখিল মাদরাসার শিক্ষক। এই ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট জড়িত দুষ্কৃতকারীদের ‘নরকের কীট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি বাঘমারা থানার ওসিকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
প্রায়ই গণমাধ্যমে এমন জঘন্য ঘটনার খবর আসে, যা জেনে বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষ দারুণভাবে আহত হয়। এর আগেও দেখা গেছে, কিছু মানুষ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য তার পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলে, জমির ফসল নষ্ট করে ফেলে, বাগানের চারাগাছ কেটে ফেলে, হাঁস-মুরগির খামারে বা গোয়ালে আগুন দিয়ে নিরীহ প্রাণীদের পুড়িয়ে মারে। এরা কোনোভাবেই কি মানুষের কাতারে পড়ে? জানা যায়, এক দশকেরও বেশি সময় আগে এক বৃদ্ধসহ কয়েকজন সড়কের পাশে অর্ধশত তালের বীজ লাগান। সেই বীজ থেকে গাছ গজিয়ে এত দিনে বেশ বড় হয়ে ওঠে। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেই সড়কের পাশে থাকা পুকুরপারে কিছু আমগাছ লাগান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার আলম। আমগাছে তালগাছের ছায়া পড়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন।
স্থানীয় লোকজন জানায়, তালগাছের বাকল তুলে তাতে কীটনাশক জাতীয় তরল লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার তাৎক্ষণিক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার কারণে তালগাছগুলো আধমরা অবস্থায় টিকে আছে। উচ্চ আদালত বিষয়টি জানতে পেরে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। আদালত বলেন, ‘আইন-আদালত দিয়ে দেশের কোটি কোটি মানুষকে ভালো করা সম্ভব নয়, যদি আমরা নিজেরাই মানবিক, সচেতন না হই। যারা এভাবে গাছ মেরে ফেলতে চায়, পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলে, প্রাণী হত্যা করে, তারা নরকের কীট।’ যিনি গাছগুলো লাগিয়েছিলেন আদালত তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন এবং গাছ বাঁচানোর চেষ্টা করার কারণে কৃষি কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান।