নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়ছে। চাল, ডাল, তেল ও চিনির দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুরগির দামও বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের বাড়তি দাম, জাহাজভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও সমন্বয় করতে হচ্ছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দা, গুঁড়া দুধ, সবজি, মাছ, মাংস, ডিমসহ ভোগ্য ও নিত্যপণ্যের যে দাম ছিল, জুলাই-আগস্টে তার চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে এসে বেড়েছে আরেক দফা। স্বাভাবিকভাবেই মধ্যবিত্তসহ নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ বেড়েছে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সপ্তাহ দুয়েক আগেও যে মসুর ডাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। সরকার ও ব্যবসায়ীরা মিলে সর্বোচ্চ খুচরা দাম ৭৫ টাকা বেঁধে দিলেও বাজারে খোলা চিনি ৮০ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেড়েছে।
করোনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ার পর থেকে পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত সব ধরনের তেলের দাম বেড়েছে। চালের দাম মাসখানেকের মধ্যে না বাড়লেও দাম কমেনি। বাজারে মোটা চালের দামও এখন ৪৬ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। মাছ ও গরুর মাংস, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যই বিক্রি হচ্ছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি দামে। বাজারে সবজির দাম এখন গড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।
বাজারে পণ্যের দাম ওঠা-নামা করে, এটা বাজার অর্থনীতির নিয়ম। কিন্তু আমাদের দেশে পণ্যের দাম বাড়া-কমা সাধারণ বাজারনীতিও মানে না। এর কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন।
কোনো কোনো সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। প্রশ্ন উঠতে পারে, বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কি ঠিকমতো নজরদারি করছে? পণ্য যৌক্তিক দামে বিক্রি হচ্ছে কি না, না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কি না—এসব বিষয় নিয়ে তদারকি আদৌ কি আছে? বাজারের সমান্তরালে একটি বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সরকারের আন্তরিকতা আছে বলে মনে হয় না।
পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষ অস্বস্তিতে আছে। কাজেই বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।