English

18 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ১৬, ২০২৫
- Advertisement -

বায়ুদূষণ রোধে ব্যবস্থা নিন: জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি

- Advertisements -
বাংলাদেশ বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ। বায়ুদূষণের কারণে মানুষের ফুসফুস আক্রান্ত হচ্ছে, শ্বাসতন্ত্রের রোগ বাড়ছে। বায়ুদূষণ ক্যান্সার, হৃদরোগসহ আরো অনেক রোগের কারণ হচ্ছে। এসব রোগে প্রতিবছর বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বায়ুদূষণের এমন দুর্বিষহ অবস্থা চললেও বায়ুদূষণ রোধের প্রচেষ্টা কম।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিতকরণ: প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে আলোচকরা বায়ুদূষণ রোধে সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
তাঁরা বলেন, উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় মানুষকে, মানুুষের জীবনকে ও জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো বায়ুদূষণের প্রতিও রাষ্ট্রকে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।

বায়ুদূষণের কারণ বা উৎসগুলো আমাদের অজানা নয়। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট আইন ও বিধিমালা রয়েছে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিধিমালায় ১৩টি মন্ত্রণালয় ও ৩৫টি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কি? পালন করলে নিশ্চয়ই বায়ুদূষণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশ শীর্ষস্থান অর্জন করত না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের এমন অবহেলা কেন? বিভিন্ন সময় প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর রোগাক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মারা যায়, তার প্রায় এক-চতুর্থাংশই মারা যায় বায়ুদূষণজনিত কারণে।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হলো সনাতনি পদ্ধতির ইটভাটা ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন। বায়ুদূষণের জন্য দায়ী কালো ধোঁয়ার ৩৮ শতাংশই নির্গমন হয় ইটভাটা থেকে।
আর যানবাহন থেকে নির্গত হয় ১৯ শতাংশ। দূষণের এই দুটি উৎস নিয়ন্ত্রণে আমরা কী করেছি? দেশে বৈধ ইটভাটার তুলনায় অবৈধ ইটভাটাই বেশি। এগুলোতে ব্যবহার করা হয় ড্রাম চিমনি, যেগুলোর দূষণ অনেক বেশি। নাগরিকদের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত এসব ইটভাটা বন্ধে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। উচ্চ আদালতেরও নির্দেশ রয়েছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, এ ধরনের ইটভাটা বন্ধ হচ্ছে না, বরং নতুন করে তৈরি হচ্ছে। এগুলোর কারণে ইট পোড়ানোর আধুনিক পদ্ধতি মার খাচ্ছে। ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়ানো যাচ্ছে না। রাজধানীসহ সারা দেশেই লক্কড়ঝক্কড় বাস ও ট্রাক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কালো ধোঁয়ায় চারদিক অন্ধকার করে দিচ্ছে। তবু এসব বাস-ট্রাক বন্ধ করা হচ্ছে না। এর একটাই কারণ, বায়ুদূষণ রোধে যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের আন্তরিকতার অভাব।
বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতিবছর বায়ুদূষণের কারণে সৃষ্ট রোগব্যাধিতে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তার পরও এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অবহেলা ও যথাযথ উদ্যোগের অভাব এক অমার্জনীয় অপরাধ।
আমরা আশা করি, বায়ুদূষণের কারণগুলোর প্রতি সরকার প্রকৃত অর্থেই ‘জিরো টলারেন্স’ প্রদর্শন করবে। মানুষকে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষায় দ্রুত পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন