বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উত্স জনশক্তি রপ্তানি। দেশের বাইরে বাংলাদেশের জনশক্তির সুনাম রয়েছে, কিন্তু বিদেশে গিয়ে দেশের জনশক্তি অনেক সময় বিপাকে পড়ে। আমাদের দূতাবাসগুলো অভিবাসীবান্ধব নয়, এমন অভিযোগ অনেক পুরনো। সেই পুরনো অভিযোগ নিয়ে নতুন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বিদেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রবাসী কর্মীরা। পাসপোর্ট নবায়ন, কল সেন্টার, কর্মী সত্যায়ন, কারখানায় তদারকিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোর অসহযোগিতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে প্রবাসী কর্মীদের।দূতাবাসের অসহযোগিতার কারণে বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। অন্যদিকে দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের আন্তরিক চেষ্টা থাকে প্রবাসী কর্মীদের সেবা প্রদানে। কিন্তু জনবলসংকটের কারণে অনেক সময়ই প্রয়োজনীয় সেবা দিতে ব্যর্থ হন তাঁরা।এমন ভুক্তভোগী একজনের ভোগান্তির উদাহরণ তুলে ধরে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই অভিবাসী কর্মী গত ২ জানুয়ারি সকাল ৬টার দিকে পাসপোর্ট নবায়ন করাতে হাইকমিশনে যান। ব্যাংক ড্রাফট করে ওয়েটিংরুমে অপেক্ষায় থাকেন। সকাল ১১টার দিকে একজন কর্মকর্তা আসেন।
তিনি সবার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন। যাচাই-বাছাই শেষে আবার অপেক্ষা করতে বলেন। জানান, আরেকজন কর্মকর্তা আসার পর সবার পাসপোর্ট জমা নেবেন। তিনিসহ অন্যরা ওই কর্মকর্তার অপেক্ষায় থাকেন। এভাবে আরো পাঁচ ঘণ্টা পার হলে বিকেল ৪টার দিকে ওই কর্মকর্তা সবাইকে পাসপোর্ট জমা দিতে ডাকেন।
তখন তিনি সবাইকে জানান, পাসপোর্টের সঙ্গে জন্ম নিবন্ধন কার্ড লাগবে। এ ছাড়া পাসপোর্ট জমা নেওয়া হবে না। কিন্তু হাইকমিশনের পেজে বলা হয়নি যে এমআরপি পাসপোর্ট করতে জন্ম নিবন্ধন কার্ড লাগবে। এ কারণে কেউ সঙ্গে করে জন্ম নিবন্ধন কার্ড নেননি। এখন আবার জন্ম নিবন্ধনের কপি নিয়ে নতুন করে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। হয়তো ওই সময়ও তাঁর দেখা পেতে পুরো দিন সময় লাগবে।বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে এভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রবাসী কর্মীরা। পাসপোর্ট নবায়ন, কল সেন্টার, কর্মী সত্যায়ন, কারখানায় তদারকিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোর অসহযোগিতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে প্রবাসী কর্মীদের। তাঁরা বলছেন, দূতাবাসের অসহযোগিতার কারণে বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।গত ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দূতাবাসগুলোর অসহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।বাংলাদেশি অভিবাসীদের, বিশেষ করে অস্থায়ী অভিবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। তাঁদের দিকে দৃষ্টি দিতেই হবে। তাঁরা যেন কোনোভাবেই হেনস্তার শিকার না হন সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।