নিত্যপণ্যের বাজার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বোতলজাত তেলের দাম বেড়েছে। আমদানি করেও কমানো যায়নি চালের দাম। বরং খুচরা ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, সামনের দিনগুলোতে চালের দাম আরো বাড়তে পারে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ভোজ্য তেলের দাম নিয়ে ভোক্তার অস্বস্তি বাড়ছেই।
চলতি সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও আগের সপ্তাহে কিছুটা কমলেও এ সপ্তাহে আবার বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানির কারণে দেশি চালের বাজারে যে প্রভাব পড়ার কথা, সেটা না পড়ে বরং উল্টোটা ঘটছে সরবরাহের ধীরগতির কারণে। সপ্তাহ দুয়েক আগে আমদানির খবরে সব ধরনের চালের দাম এক-দুই টাকা করে কমতে শুরু করেছিল।
কিন্তু আমদানি ও সরবরাহের ধীরগতিতে চলতি সপ্তাহে থেমে গেছে সেই ধারা। উল্টো আমদানি করা কয়েক প্রকারের মোটা চালের দাম বাড়তি থাকায় বেড়েছে দেশি এ ধরনের চালের দাম। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, শীতের সবজিতে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও দেশি পেঁয়াজের দাম স্থির হয়ে আছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। রসুনের দাম আগের মতোই ৮০ থেকে ১০০ টাকায় রয়েছে। আলুর কেজি ২০ টাকাতেই স্থির।
বাজারে চাল, পেঁয়াজ ও আলুর মতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার জন্য ব্যবসায়ীদের ‘সিন্ডিকেট’ এবং তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। সংস্থাটির এক গবেষণা প্রতিবেদনে উৎপাদন তথ্যের অসামঞ্জস্যও যে মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তা উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে আলাদা করে চাল, পেঁয়াজ ও আলুর দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে তা ঠেকাতে কিছু সুপারিশও রাখা হয়েছে।
সরকারের নীতিনির্ধারকরাও স্বীকার করবেন, মিলার ও পাইকাররা বাজার পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। বাজার তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সরকারের গুদামে চাল না থাকলে কোনোভাবেই দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সম্ভবত এ জন্যই সরকার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাল আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় দুই মাস আগে শুরু হলেও পর্যাপ্ত চাল আমদানি হয়নি। বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির ওপর ট্যাক্স কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু আমদানিকারকরা তা ১০ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছে।
সব মিলিয়ে এখন বাজারে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। নিত্যপণ্যের দাম সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।