বাংলাদেশে ডিজিটাইজেশন দ্রুত এগিয়ে চলায় অনলাইনে পণ্য কেনাবেচাও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রচুর মানুষ ঘরে বসেই নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য কেনারও সুবিধা পায়। এই সময়ে গড়ে ওঠে অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সুষ্ঠু নজরদারি ও বিদ্যমান নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স বা অনলাইন শপিং ব্যবস্থার নামে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সেই অর্থ বিদেশে পাচার করেছে অনেকে। রাতারাতি উধাও হয়ে গেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। আর এতে বিপদে পড়েছেন এদের সঙ্গে বিনিয়োগ করতে আসা শত শত তরুণ উদ্যোক্তা। অনেক প্রতারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ, পণ্য সরবরাহে বিলম্ব, বিদেশে টাকাপাচারসহ নানা ধরনের অপকর্মের অভিযোগ উঠছে।
ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে অনলাইন বাণিজ্য বা ই-কমার্সের পরিধি আরো বাড়ার কথা। ঘরে বসেই কেনাকাটাসহ নানা রকম সেবা পাওয়ায় ই-কমার্সের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহও বেড়েছিল। এই আগ্রহ কাজে লাগিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান বাড়লেও সে হারে নজরদারি ছিল না। শুরুতে ই-কমার্সের আলাদা কোনো নীতিমালা ছিল না। এখন নীতিমালা হলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হয়নি। আর এর সুযোগ নিয়েছে এক শ্রেণির প্রতারকচক্র।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বিতর্কিত ইভ্যালির মতো ‘পঞ্জি’ মডেলে ব্যবসা চালাচ্ছে আরো পাঁচটি ই-কমার্স কম্পানি। এদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক মূল্য ছাড়, সময়মতো অর্ডার সরবরাহ না করা, ক্রেতার পণ্যমূল্য ফেরত না দেওয়া, ক্রেতাকে মিথ্যা তথ্যে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখানোসহ অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কম্পানিগুলো সম্পর্কে অনুসন্ধান চলছে বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া কর্মকাণ্ড ‘অস্বাভাবিক’ মনে হওয়ায় একটি গোয়েন্দা সংস্থা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কাছ থেকেও এদের সম্পর্কে তথ্য নিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিতর্কিত এসব ই-কমার্স কম্পানির ব্যাবসায়িক মডেল প্রচলিত ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স নিয়ে যে প্রতারণা করছে তাতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার নজরদারির বাইরে থাকায় ফেসবুক পেজভিত্তিক এফ-কমার্স খাতের প্রতারণা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। ডিজিটাইজেশনের এই সময়ে এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়াতে হবে।