স্বস্তি নিয়ে ২০২০ সাল শুরু হলেও প্রান্তিকের শেষার্ধে করোনাভাইরাস মহামারি দেশের অর্থনীতিকে ওলটপালট করে দেয়। শেষ প্রান্তিকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা থেকে মুক্ত নয় দেশ। সারা বিশ্বে কর্মসংস্থান কমেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সংকুচিত হয়েছে। রেমিট্যান্সে ভর করে ৪২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে রিজার্ভ।
সরকারের সময়োচিত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশেষ করে সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজে সচল থাকে অর্থনীতির চাকা। পুরোপুরি দৃশ্যমান পদ্মা সেতু ঘিরে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে দক্ষিণ জনপদের মানুষের মধ্যে।
অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিতে ২০২১-২৫ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আরো অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত আগস্টে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের সপ্তম সভায় দেশে আরো ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান অনুমোদিত হয়েছে। সরকার ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। এর মধ্যে ৯৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন পেয়েছে। যদিও বাস্তবায়নাধীন সরকারি-বেসরকারি ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল।
কভিডের কারণে এখন দেশ এক কঠিন সময় পার করছে। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কভিড-১৯ মোকাবেলায় নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু নতুন কৌশল। সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প ও নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যেসব কার্যসম্পাদন সূচকে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে সেসব ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া অর্থনীতিতে পিছিয়ে পড়া খাতগুলো সংস্কারের গতি বাড়ানোর বিষয়টি কভিডের কারণে আরো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কভিড-১৯-এর কারণে সৃষ্ট সাময়িক বেকারত্বসহ বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
এক কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা সামনে নিয়ে অনুমোদিত ২০২১-২৫ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রবাসে, বাকি ৮১ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে দেশে।
কভিড সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে যে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশকে নিজেদের মতো করে অর্থনীতি সাজাতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে দেশ অবশ্যই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আমরা মনে করি।